বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
বর্ষার আগে বাঁধ সারানোর কাজ না সেরে এখন করা হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন তুলে প্রশাসনের একাংশকে ফের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তা-ই নয়, এ নিয়ে জবাবদিহি চাইলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রীর কাছেও।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রশাসনিক বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, সরকারি আধিকারিক ও ঠিকাদারদের গোপন আঁতাঁত বরদাস্ত করা হবে না। শুক্রবার কল্যাণীতে প্রশাসনিক সভায় তিনি ফের বলেন, ‘‘যাঁরা এ সব করছেন, বন্ধ করুন।’’
এ দিন কল্যাণীতে নদিয়ার বৈঠকে শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে অভিযোগ করেন, তাঁর এলাকায় গঙ্গা ভাঙন বিরাট সমস্যা। দীর্ঘদিন ধরেই বাঁধ মেরামতির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু বাম আমলের মতো এখনও সেই বর্ষাতেই বাঁধ মেরামতির তোড়জোর চলছে। এই সময় কাজ হলে তা ফের নদীগর্ভে চলে যাবে।
এই অভিযোগ শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মমতা বলেন, ‘‘ঠিকই তো, এখন কেন কাজ হবে!’’ সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা উঠে দাঁড়িয়ে নিজেদের মতো করে বিষয়টি ব্যখ্যা করার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু তাঁদের কথায় কর্ণপাতই করেননি মুখ্যমন্ত্রী।
উল্টে মমতা বলেন, ‘‘এই সময়ে টেন্ডার দিয়ে কাজ করা মানে তো টাকা জলে যাবে। এটা কেন সরকার মানবে?’’
প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির অনেক জনপ্রতিনিধিই অভিযোগ করেন, এ সব অনেক দিনের ‘কালচার’। বর্ষায় কাজ হলে পরে তার গুণগত মান খতিয়ে দেখারও সুযোগ থাকে না। ঠিকাদারেরা কাজ না করেই প্রাপ্য পেয়ে যান। আমলাদের একাংশ এতে জড়িত থাকেন।
সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন মমতার সঙ্গেই ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সটান তাঁর কাছেই কৈফিয়ত দাবি করেন। রাজীব জানান, বর্ষায় কোনও কাজ করা হবে না। তাঁর দফতর শুধু কাজ এগিয়ে রাখছে মাত্র। যাতে বর্ষা শেষ হলেই কাজ শুরু করা যায়।
এ নিয়ে আর কথা না বাড়ালেও মমতা বলেন, ‘‘আমি এ সব মেনে নেব না। যাঁরা এ সব করছেন, বন্ধ করুন। সতর্ক হোন।’’