নজর-নেই: ফাঁকা পড়ে সাফারি পার্কের নজরমিনার। —নিজস্ব চিত্র।
এনক্লোজার থেকে লাফ দিয়ে চিতাবাঘ সচিনের পালানোর ঘটনা শিলিগুড়ির কাছে থাকা বেঙ্গল সাফারি পার্কের নিরাপত্তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। তেমনই প্রশ্ন উঠেছে সেখানে কর্মরত প্রায় একশো কর্মীর প্রশিক্ষণ নিয়েও। বন দফতরের একাংশ মনে করছে ওই কর্মীদের মাঝেমধ্যে প্রশিক্ষণ হলেও তা পর্যাপ্ত বা বিজ্ঞানসম্মত নয়। তবে প্রশিক্ষণের অভাবে এসব ঘটনা ঘটছে না বলেই দাবি করছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। তবে পর্যটনের সঙ্গে যুক্তদের দাবি, যেখানে বন্যপ্রাণী নিয়ে রোজ ওঠাবসা চলে সেখানে যথাযথ ভাবে প্রশিক্ষিত কর্মী না থাকলে পর্যটকদের ঝুঁকি বাড়ে।
সাফারি পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিকর্তা রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘আমাদের পার্কের কর্মীরা সকলেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন। তবে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আমরা কাজ করানোর চেষ্টা করছি।’’ শনিবারই বনমন্ত্রী জানিয়েছিলেন সাফারি পার্কের কর্মীরা অস্থায়ী। দ্রুত স্থায়ী রেঞ্জার, বিট অফিসার-সহ একাধিক বনকর্মীর নিয়োগের কথাও বলেছেন তিনি।
পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রয়োজনমত কর্মী নিয়োগ এবং ছাঁটাই হয়। এই কারণে কর্মীদের প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়া মার খাচ্ছে বলে দাবি পার্কের ফরেস্ট গার্ডদের একটি অংশের। তাঁদের দাবি, সাফারির কর্মীদের সাময়িক প্রশিক্ষণ দিয়ে পশুপাখি ও পর্যটকদের নিরাপত্তা ঠিক রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই কর্মীদের বিট অফিসার বা রেঞ্জারদের মতো প্রশিক্ষণ হয় না। জু-কিপার্সদের কোনও প্রশিক্ষণই হয় না বলেও অভিযোগ। সময় সময় কর্মীদের বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে কিছু ক্লাস নেওয়া হয় বলে পার্ক সূত্রেই জানা গিয়েছে। প্রায় ২ বছর ধরে এ ভাবেই চলছিল বেঙ্গল সাফারি পার্ক।
পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত ট্যুর অপারেটরদের দাবি, যথাযথভাবে প্রশিক্ষিত না হলে কর্মীদের যেমন ঝুঁকি বাড়ে। তেমনই ঝুঁকি বাড়তে পারে পার্কে আসা দর্শকদেরও। একটি পর্যটন সংগঠনের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘এখন পার্কে প্রচুর পর্যটক আসতে শুরু করেছেন। সাফারি পার্কে প্রশিক্ষিত কর্মী না থাকার জন্য কোনও গাফিলতি হলে তা কিন্তু একেবারেই অনভিপ্রেত হবে।’’ মানুষের মনে ভয় ঢুকে গেলে তা পর্যটন এবং পার্কের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক হবে বলে ধারণা পর্যটন সংস্থাগুলোর।
যদিও সচিনের লাফ দেওয়ার সঙ্গে কর্মীদের প্রশিক্ষণের সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, সচিনের পালানোর মতো ঘটনা চিড়িয়াখানা বা সাফারির ক্ষেত্রে খুবই বিরল।