কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট নিয়ে প্রধান বিচারপতিকে দেওয়া চিঠিতে আইনজীবীদের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। বিচারপতি মান্থার এজলাসে গিয়ে আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তাঁর-সহ কয়েক জন আইনজীবীর সই জাল করা হয়েছে। অথচ বিচারপতির এজলাস বয়কট করার সিদ্ধান্তে তাঁদের কোনও সমর্থন নেই। একই অভিযোগ করেছেন আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ও।
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, “ এই ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক এবং বিড়ম্বনারও বটে। আইনজীবীর স্বাক্ষর যদি অন্য আইনজীবীর বিরুদ্ধে জাল করার অভিযোগ ওঠে, তা হলে সাধারণ মানুষের কী ধারণা হবে? আমার রায় তো সুপ্রিম কোর্টও বহাল রেখেছে।” একই সঙ্গে বিচারপতি জানান, যাঁদের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে, তাঁরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ থেকে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং অতিসক্রিয়তার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলা সরানোর দাবিতে সোমবার তাঁর এজলাসের সামনে বিক্ষোভ দেখান ‘তৃণমূলপন্থী’ বলে পরিচিত আইনজীবীরা।
সোমবার সকালে কিছু সময়ের জন্য এই আইনজীবীরা রাজাশেখর মান্থার এজলাস ঘেরাও করেন। অন্য আইনজীবীদের এজলাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। বিজেপি এবং বাম মনোভাবাপন্ন আইনজীবীদের এজলাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হলে আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং অতিসক্রিয়তার অভিযোগ সম্পর্কিত মামলাগুলি বিচারপতি মান্থার এজলাসে পাঠিয়েছিলেন। তিন মাস আগে এই মামলাগুলিই মান্থার এজলাস থেকে সরিয়ে অন্য বিচারপতিদের এজলাসে পাঠানো হয়েছিল। মাত্র তিন মাসের মধ্যে মান্থার এজলাসে এই মামলাগুলি ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তের কারণে ক্ষুব্ধ তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা। তাঁদের দাবি, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং অতিসক্রিয়তা সংক্রান্ত এই মামলাগুলি বিচারপতি মান্থার বেঞ্চ থেকে অন্য বেঞ্চে সরাতে হবে। এই আইনজীবীদের অভিযোগ, বেশ কিছু মামলায় রাজাশেখর মান্থা একপাক্ষিক রায় দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগও এনেছেন তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা।