দাতাবাবার মাজারে। নিজস্ব চিত্র।
উত্তপ্ত নানুরের পরিস্থিতির জন্য সিপিএমের ঘাড়েই দোষ চাপালেন তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম। এমনকী, জেলায় তৃণমূলের চির পরিচিত গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বকে সংবাদমাধ্যমের তৈরি করা বলেও তিনি দাবি করলেন। ভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার পরে সোমবার প্রথম বার জেলায় এসে এমনই আক্রমনাত্মক ভূমিকায় দেখা গেল তৃণমূলের বীরভূম পর্যবেক্ষককে।
গত কয়েক দিন ধরেই নানুর এলাকায় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বোমা উদ্ধার করছে পুলিশ৷ প্রতিটি ক্ষেত্রেই ওই ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে সরব হচ্ছেন বিরোধীরা৷ স্বভাবতই অস্বস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে৷ এ দিন নানুরে দলের মহিলা সমাবেশে যোগ দিয়ে ফিরহাদ দাবি করেন, ‘‘এখনও সিপিএমের কিছু হার্মাদ রয়েছে৷ তারাই ভোটে সন্ত্রাস করতে বোমা বানাচ্ছে৷ আর ওই সব বোমা সামাল দিতে না পেরে কোনও একটা জায়গায় রেখে পুলিশকে খবর দিচ্ছে৷ আমাদের নামে মিথ্যা বদনাম দিচ্ছে।’’ এরই পাশাপাশি ফিরহাদের দাবি, নানুরে তাঁদের দলে কোনও গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব নেই৷ গোটাটই সংবাদমাধ্যমের সৃষ্টি৷ ফিরহাদ যে সমাবেশে এই সব দাবি জানাচ্ছেন, সেখানে তখন উপস্থিত দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, তৃণমূল নেতা বিকাশ রায়চৌধুরী, নানুরের প্রার্থী গদাধর হাজরা৷ যদিও দেখা মেলেনি এলাকার দাপুটে নেতা কাজল শেখের। বিরোধীদের অভিযোগ, কাজলের সঙ্গেই অনুব্রত-গদাধরের বিরোধের জেরে বারবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নানুরের এলাকা। সেই কাজলের এ দিনের অনুপস্থিতিই শাসকদলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের বড় প্রমাণ বলেই বিরোধীদের দাবি।
এ দিনই নানুর থেকে বেরিয়ে ফিরহাদ যান সিউড়িতে শহর তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে যোগ দেন। বিকালে সম্মেলনটি হয় সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। অনুব্রত ছাড়াও ছিলেন চন্দ্রনাথ সিংহ এবং শহরের তৃণমূল কাউন্সিলরেরা। সম্মেলনে কেন তৃণমূলকে ভোট দেবেন, কেন বিরোধী প্রার্থীদের ভোট নয়, সে বিষয়ে আবেদন করার পাশাপাশি বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন ফিরহাদ। কটাক্ষ থেকে তিনি নিস্তার দেননি সিউড়ি কেন্দ্রে তৃণমূলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দুই বিরোধী প্রার্থীকেও। বাস্তব ছবিটা জেনেও ফিরহাদ মিথ্যা কথা বলছেন বলে দাবি করেছে সিপিএম নেতৃত্ব। ফিরহাদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনন্দ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গোলাগুলির রাজনীতি আমরা করি না৷ ওটা তৃণমূলেরই একচেটিয়া সংস্কৃতি। এত দিন সবাই তা জেনে গিয়েছেন।’’