Child Labour

রাজ্য শিশুশ্রমিক-শূন্য, বিধানসভায় দাবি মন্ত্রীর

২০২৪ সালের ১১ মাসে এ রাজ্যে কোনও শিশুশ্রমিকের খোঁজ পায়নি রাজ্য শ্রম দফতর। বিধানসভায় এ দিন একটি প্রশ্নের জবাবে গত পাঁচ বছরের হিসেব দিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ০৫:১৬
Share:

শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে শিশুশ্রমিক নেই। বিধানসভায় শুক্রবার এই কথা জানিয়ে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বললেন, ‘‘এ তথ্য সত্য!’’

Advertisement

নিত্য দিনের অভিজ্ঞতায় হয়তো মিলবে না। তবু রাজ্য সরকারের দাবি, শিশুশ্রমিকের ‘কু-প্রথার বিলোপ’ হয়েছে এ রাজ্যে। অন্তত ২০২৪ সালের ১১ মাসে এ রাজ্যে কোনও শিশুশ্রমিকের খোঁজ পায়নি রাজ্য শ্রম দফতর। বিধানসভায় এ দিন একটি প্রশ্নের জবাবে গত পাঁচ বছরের হিসেব দিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী। তাঁর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সাল থেকে এই পাঁচ বছরে রাজ্যে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা যথাক্রমে ১৪, ৬, ৩,১ এবং ২০২৪ সালে শূন্য।

শ্রমমন্ত্রীর উদ্দেশে এ দিন এই সংক্রান্ত প্রশ্নটি করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক মধুসূদন বাগ। গত পাঁচ বছরের সরকারি হিসেব দিয়ে শ্রমমন্ত্রী জানিয়েছেন, চলতি বছরে কোথাও এক জন শিশুশ্রমিকের তথ্যও নেই সরকারের কাছে। শিশুশ্রম নিরসনে সরকারের এই আশাতীত উন্নতির কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গৃহীত একাধিক প্রকল্পে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির অগ্রগতির কারণেই শিশুশ্রমিক শূন্য করা সম্ভব হয়েছে।’’ তৃণমূল আমলে রাজ্য সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, ‘কন্যাশ্রী’, ‘যুবশ্রী’র মতো প্রকল্প এই সাফল্যে সহায়ক হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। পাশাপাশি, চলতি বছরে রাজ্যে শিশুশ্রমিক সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ না-থাকার কথা জানিয়ে মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘এক জন শিশুকেও উদ্ধার করা হয়নি। ফলে, শিশুশ্রমিকের সংখ্যা শূন্যই বলা যায়।’’

Advertisement

প্রশ্ন-কর্তা বিজেপি বিধায়ক অবশ্য সরকারের এই তথ্য মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, আরও অনেক বিষয়ের মতোই পরিস্থিতি ভাল দেখাতে এই তথ্যে গরমিল রয়েছে। নিজেদের দায়িত্ব এড়াতেই শ্রম দফতর এই তথ্য রাখে না। যদিও মন্ত্রীর দাবি, ধারাবাহিক নজরদারি এবং সচেতনতা বৃদ্ধির ফলেই এ কাজ সম্ভব হয়েছে।

প্রসঙ্গত, অন্য সূত্রগুলিতেও অবশ্য এই তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ প্রায় নেই-ই। কেন্দ্রীয় সরকার দেশব্যাপী যে জনগণনা করে, তা শেষ হয়েছে ২০১১ সালে। সেখানে এখনকার তথ্য নেই। এ ছাড়া ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো’র তথ্যে এই রকম বিষয়ের আভাস পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানে রাজ্যের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতেই তা নথিবব্ধ করা হয়। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তথ্যই গৃহীত হয়। তবে সর্বভারতীয় ও রাজ্য স্তরে বহু সংস্থা এই ধরনের সমীক্ষা করে। তাদের বড় অংশই আবার সরকারি তথ্যে নির্ভর করে।

ফলে, বাস্তবে অবিশ্বাস্য মনে হলেও বিধানসভায় রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজ্য এখন শিশুশ্রমিকমুক্ত। তবে বিধি অনুযায়ী, কোথাও দোকানে, বাজারে পরিবারের শিশুদের কাজে লাগালে তা আইনত অপরাধের মধ্যে পড়ে না। একই ভাবে অভিনয়, শিল্প ও সংস্কৃতি জগতে শিশুরা থাকলে, তা-ও এই আইনের আওতায় পড়ে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement