২০১৪ সালের ২ অক্টোবর এই বাড়িতেই হয়েছিল বিস্ফোরণ।—ফাইল চিত্র।
বর্ধমানের খাগড়াগড়ে তাঁর বাড়িতেই ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেই আব্দুল হাকিম-সহ ১৯ জন অভিযুক্ত ওই মামলার বিচার পর্বের মধ্যেই দোষ কবুল করেছেন বলে তাঁদের আইনজীবীদের দাবি। ওই কৌঁসুলিরা জানান, বৃহস্পতিবার এনআইএ বা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার বিশেষ আদালতের বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলালের সামনে ১৯ অভিযুক্ত দোষ স্বীকার করেন। তবে বিস্ফোরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কওসর ওরফে বোমা মিজান, কদর গাজি, ডালিম শেখ, ইউসুফ শেখ এ দিন অপরাধ স্বীকার করেননি।
খাগড়াগড়ের ঘটনার পরেই বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি-র নাশকতামূলক কাজকর্মের ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যায়। চার্জশিট পেশ করে তদন্তকারীরা জানান, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করাই ছিল অভিযুক্ত জেএমবি জঙ্গিদের মূল উদ্দেশ্য। জেএমবি-র চাঁইয়েরা এ রাজ্যের বাছাই করা কয়েকটি মাদ্রাসায় অস্ত্রচালনা ও বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ দিত।
অভিযুক্তদের আইনজীবী মহম্মদ আবু সেলিম ও ফজলে আহমেদ শুনানি শেষে আদালত-চত্বরে জানান, খাগড়াগড় বিস্ফোরণে এ-পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ৩১ জন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন কিছু দিন আগে বিচারকের কাছে এক আবেদনে জানান, তাঁরা দোষ স্বীকার করতে চান। এ দিন সেই আবেদনের শুনানি ধার্য ছিল। গুলশন আরা বিবি, আলিমা বিবি-সহ ১৯ জন অভিযুক্তকে এক-এক করে কাঠগড়ায় তোলা হয়। প্রত্যেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কারও (তদন্তকারীদের) প্ররোচনায় তাঁরা দোষ স্বীকার করছেন কি না। ওই অভিযুক্তেরা জানান, তাঁরা নিজেরাই দোষ স্বীকার করতে চান। কারও প্ররোচনায় তা করছেন না। এর পরে বিচারক ওই অভিযুক্তদের জানান, এই অপরাধের শাস্তি যে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে, সেটা তাঁদের জানা আছে কি না। ওই ১৯ জন অভিযুক্ত জানান, তাঁরা সম্ভাব্য শাস্তির বিষয়টি জানেন।
বিস্ফোরণ মামলার প্রধান তদন্তকারী অফিসারও এ দিন আদালতে হাজির ছিলেন। বিচারক তাঁর কাছে জানতে চান, যাঁরা দোষ স্বীকার করলেন, তাঁদের কী শাস্তি হওয়া উচিত। ওই অফিসার জানান, আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি দিক।