খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডের তদন্তে শনিবার শান্তিপল্লির ডালিম শেখ, তালেহার শেখ ও আব্দুল মালেকের বাড়ির কুয়ো থেকে মেলা ব্যাগে এমন কিছু সামগ্রী মিলেছে, যাতে করে রবিবার বোলপুর তদন্তে ছুটে এলেন ডিআইজি অনুরাগ তন্খা। ইতিমধ্যেই ওই তিন বন্ধ বাড়ির একটি থেকে তল্লাশির সময় আপত্তিকর নথি ও সাদা পাউডারও মিলেছে। বাজেয়াপ্ত কিছু জিনিস ফরেন্সিক তদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন গোয়েন্দারা। বিস্ফোরণের সঙ্গে কীর্ণাহারের নিমড়া ও বোলপুরের সিয়ানের শান্তিপল্লির যোগ এখনই উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।
গোয়েন্দাদের একটি সূত্র বলছে, মঙ্গলকোট থেকে কীর্ণাহারে কদর শেখের বাড়ি এবং সেখান থেকে শান্তিপল্লির ডালিম শেখের বাড়ির দূরত্ব মোটামুটি এক। এই তিনটি জায়গার মধ্যে কোনও সন্দেহজনক ‘রুট’ ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। ঘটনা হল, পেশায় তালেহার শেখ ও আব্দুল মালেক অ্যালুমনিয়ম ব্যবসায়ী হলেও, তাঁদের বাড়িতে চার চাকা গাড়ি ঢোকার জন্য রাস্তার আবেদন করেছিল স্থানীয় পঞ্চায়েতে। পঞ্চায়েত অবশ্য সে অনুমতি দেয়নি। সিয়ান-মুলুক গ্রাম পঞ্চায়েতে উপ-প্রধান পাপিয়া মুখোপাধ্যায় বলেন, “নির্মাণের সংশ্লিষ্ট কাগজ ও ভোটার কার্ড দেখাতে পারেনি তাঁরা। তাই অনুমতি দিইনি ওই পল্লিতে চারচাকা রাস্তার।”
রবিবার, খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কওসরের ‘ভাইরাভাই’ হবিবুর ঘনিষ্ঠ মিঠু ওরফে হাফিজুর রহমান ও তাঁর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনআইএ। একইসঙ্গে এ দিন এনআইএ-র ডিআইজি অনুরাগ তনখা কীর্ণাহারের নিমড়া গ্রামের বাসিন্দা হিপজুল্লা কাজিকেও বোলপুর এসডিপিও অফিসে ডেকে, দুপুর থেকে দফায় দফায় জেরা করেন। এর আগে, এনআইএ তাঁকে এক দিনের জন্য আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।
গোয়েন্দারা আগেই জেনেছিল, হবিবুরের মাধ্যমেই বর্ধমান শহরের বাবুরবাগে বাড়ি ভাড়া করেছিল কওসর। বাড়ির মালিকের বর্ণনা শুনে হবিবুরের স্কেচও আঁকিয়েছিল গোয়েন্দারা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা এ দিন সেই স্কেচ ও নানা সূত্রে মেলা সন্দেহভাজনদের ছবি দেখান হাফিজুর ও হিপজুল্লাকে। দু’জনকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করেন গোয়েন্দারা।
এ দিন, হাফিজুর রহমান ও তাঁর বাড়িতে বসবাসকারী সব্জি বিক্রেতা সৈয়ফ শেখকে ডেকে ঘণ্টাখানেক জেরার পর ডেকে পাঠান হাফিজুরের মা রোশনারা বিবিকেও। গতকাল যে মোবাইলটি তাঁর কাছ থেকে গোয়েন্দারা বাজেয়াপ্ত করেছিলেন, তার কয়েকটি নম্বর নিয়ে জানতে চান।