রাজ্য থেকে ধৃত দুই জঙ্গি। — ছবি: পিটিআই।
শুক্রবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে বেঙ্গালুরু ক্যাফে বিস্ফোরণে দুই অভিযুক্ত মুসাফির হুসেন শাজ়িব এবং আবদুল মাঠিন আহমেদকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। এ খবর জানাজানি হতেই বিরোধীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধতে। যদিও শুরু থেকেই রাজ্যের শাসকদলের দাবি ছিল, রাজ্য পুলিশের পারদর্শিতাতেই জোড়া গ্রেফতারি সম্ভব হয়েছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক তর্কবিতর্ক যখন মাথাচাড়া দিচ্ছে, তখন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য পুলিশের তৎপরতার কথা তুলে ধরে এনআইএ দাবি করল, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অভিযান সফল করা গিয়েছে।
গত ১ মার্চ বেঙ্গালুরুর অভিজাত ওয়াইটফিল্ডে রামেশ্বরম ক্যাফেতে ঢুকে বিস্ফোরক বোঝাই ব্যাগ রেখে আসেন এক ব্যক্তি। তাতে টাইমার সেট করা ছিল। এক ঘণ্টা পর বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে ১০ জন আহত হন। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য আইইডি ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু সেই বিস্ফোরকের শক্তি খুব বেশি না থাকায় অভিঘাত তেমন জোরালো হয়নি। ৩ মার্চ ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। তার পর থেকেই বিস্ফোরণকাণ্ডের পাণ্ডাকে খুঁজতে শুরু করে এনআইএ। এনআইএ সূত্রে খবর, মুসাফির হুসেন শাজ়িব ক্যাফেতে বোমাটি রেখেছিলেন এবং গোটা ঘটনার মূলচক্রী আবদুল মাঠিন ত্বহা। ত্বহাই বিস্ফোরণের পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন এবং পালানোর সমস্ত বন্দোবস্ত করেছিলেন। তাঁদেরই কাঁথির কাছাকাছি এলাকা থেকে ধরে ফেলল এনআইএ। শুক্রবার ধৃতদের কলকাতার বিশেষ এনআইএ আদালতে তোলা হয়। আদালত তিন দিন ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির শেষাংশে এনআইএ স্পষ্ট লিখেছে রাজ্য পুলিশের কথা। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘জঙ্গিরা নাম ভাঁড়িয়ে কলকাতার কাছে একটি লজে লুকিয়ে আছেন, এই খবর পাওয়ার পরেই তা জানানো হয় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে। এনআইএ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে অনুরোধ করে, যেন ওই দুই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে জবাব দেয়, যা দুই জঙ্গিকে আটক করার অভিযানকে সাফল্যমণ্ডিত করে।’’
প্রসঙ্গত, বাংলা থেকে বেঙ্গালুরু ক্যাফে বিস্ফোরণের মূলপাণ্ডা আটক হয়েছে, এই খবর জানাজানি হতেই রাজ্য সরকারকে আক্রমণ শুরু করে দেয় বিজেপি। পদ্ম শিবিরের আইটি শাখার প্রধান অমিত মালবীয় এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) বার্তা দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বাংলা জঙ্গিদের কাছে নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠেছে। মালবীয়ের এই বার্তার সরাসরি বিরোধিতা আসে রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে। এক্স হ্যান্ডলেই রাজ্যের পুলিশ জানিয়ে দেয়, মালবীয়ের দাবি মিথ্যা। কেন্দ্রীয় এজেন্সিও রাজ্য পুলিশের তৎপরতার স্বীকৃতি দিয়েছে।