এনআইএ আধিকারিকদের সঙ্গে ধৃত মনোব্রত জানা (মাঝে)। — নিজস্ব চিত্র।
ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে শনিবার দু’জনকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ (কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা)। আর তা করতে গিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে আবার বাধার মুখে পড়েন আধিকারিকেরা। ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে এনআইএ। তাদের দাবি, বোমা তৈরির ষড়যন্ত্র করেছিলেন ধৃত বলাইচরণ মাইতি এবং মনোব্রত জানা। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন। তদন্তে তেমনই দেখা গিয়েছে। বলাইচরণ এবং মনোব্রত স্থানীয় তৃণমূল নেতা।
এনআইএ-র তরফে জানানো হয়েছে, পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বলাইচরণ এবং মনোব্রতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মনোব্রতের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। সেখানে স্থানীয়েরা আধিকারিকদের বাধাদানের চেষ্টা করেন। এনআইএ-র এক আধিকারিক অল্প চোটও পেয়েছেন। কয়েক জন সংস্থার গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এনআইএ-র দাবি, ভূপতিনগর থানায় যেতে আধিকারিকদের বাধা দেওয়া হয়েছে। সেখানে গ্রেফতারি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শেষ করার কথা ছিল এনআইএ-র। সেই থানায় যেতেই বাধা দেওয়া হয়। এই নিয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে এনআইএ। এনআইএ দাবি করেছে, তদন্তে জানা গিয়েছে, মনোব্রত এবং বলাইচরণ বোমা তৈরি এবং তা বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করেছিলেন। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের নারুয়াবিলার গ্রামে রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনিও তৃণমূল নেতা ছিলেন। রাজকুমার নিজে গুরুতর জখন হন। জখম হন বিশ্বজিৎ গায়েন এবং বুদ্ধদেব মান্না। তিন জনেরই মৃত্যু হয়। ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর রাজ্য পুলিশ তিন জনের মৃত্যুতে এফআইআর দায়ের করে। যদিও বিস্ফোরক পদার্থ আইন প্রয়োগ করা হয়নি। উপযুক্ত ধারা প্রয়োগ এবং এনআইএ-র হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে হলফনামা দায়ের করা হয়। ২০২৩ সালের ২১ মার্চ নতুন ধারা প্রয়োগের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট।
২০২৩ সালের ৪ জুন তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। তাদের দাবি, তদন্তে বলাইচরণ এবং মনোব্রতের ভূমিকা প্রকাশ্যে এসেছে। দেখা গিয়েছে, বিস্ফোরণে তাঁরা জড়িত। দু’জনে বোমা তৈরির ষড়যন্ত্র করেছেন। তার পরেই শনিবার তল্লাশি চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইন মেনে বিশেষ এনআইএ আদালতে তাঁদের পেশ করা হবে। এই মামলায় তদন্ত চলছে।