ঘটনার দিন শীতলখুচির ১২৬ নম্বর বুথ। ফাইল চিত্র
কোচবিহারের শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে নির্দেশ দিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তথা মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মী রাধাকান্ত ত্রিপাঠীর আবেদনে সাড়া দিয়ে মানবাধিকার কমিশনের তরফে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে।
বিধানসভা ভোটের পরে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে শুরু হওয়া নতুন করে সঙ্ঘাতের আবহে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এই নির্দেশ বাড়তি তাৎপর্য বহন করছে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনাচক্রে, শীতলখুচি-কাণ্ডের সময় ডিজি পদে ছিলেন না বীরেন্দ্র। বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশন তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পরেই বীরেন্দ্রকে ফিরিয়ে আনেন।
কোচবিহারের শীতলখুচিতে ১০ এপ্রিল চতুর্থ পর্বের ভোটগ্রহণের সময় শীতলখুচি বিধানসভার অন্তর্গত মাথাভাঙা ব্লকের জোরপাটকায় আমতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বুথে অশান্তির সময় সিআইএসএফ গুলি চালিয়েছিল। ওই ঘটনায় ৪ জন নিহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী। ময়না তদন্তের রিপোর্ট বলছে, নিহতদের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যুর কারণ বুলেটের আঘাত। চতুর্থ জনের দেহে স্প্লিন্টারের ক্ষতচিহ্ন মিললেও বুলেটের আঘাত মেলেনি। সে সময় তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, বিজেপি-কে সুবিধা পাইয়ে দিতেই বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়েছে সিআইএসএফ।
এপ্রিল মাসের শীতলখুচি-কাণ্ডের তদন্তের ভার পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে দেওয়া হয় সিআইডি-কে। পাশাপাশি, গুলিচালনার ঘটনা নিয়ে পৃথক ভাবে এগ্জিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট স্তরের তদন্ত হয়। ঘটনার তদন্তে সিআইডি ইতিমধ্যেই কোচবিহারের তৎকালীন পুলিশ সুপার দেবাশিস ধর এবং মাথাভাঙা থানার আইসি-কে জেরা করেছে। গুলিচালনার ঘটনায় ছ’জন সিআইএসএফ জওয়ানকে জেরার জন্য তলব করা হলেও তাঁরা আসেননি। কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা এপ্রিল মাসেই এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ চেয়ে জাতীয় মানবাধিকার সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছিল।