পুজোর লড়াইয়ে গেরুয়া কৌশল

কলকাতা ও জেলায় বাড়ি-বাড়ি ঘুরে ‘দুয়ারে-দুয়ারে পদ্মের আগমনি’ লেখা স্টিকার বিলি করছে বিজেপি মহিলা মোর্চা।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

মুখ্যমন্ত্রী যখন পর-পর দুর্গাপুজোর উদ্বোধন এবং চক্ষুদান করছেন তখন সেই দুর্গাকে সামনে রেখেই জনসং‌যোগের একগুচ্ছ পন্থা অবলম্বন করছে রাজ্য বিজেপি।

Advertisement

এফএম থেকে শুরু করে পাড়ার মোড়ে সাউন্ডবক্সে বাজছে স্লোগান—‘পদ্ম ছাড়া দুর্গাপুজো হয় না।’ অথবা ‘পদ্ম চোখে, দুর্গা মনে।’ আবার জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়া নিয়ে বিতর্কের আবহে বারোয়ারি পুজোকমিটিগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

কলকাতা ও জেলায় বাড়ি-বাড়ি ঘুরে ‘দুয়ারে-দুয়ারে পদ্মের আগমনি’ লেখা স্টিকার বিলি করছে বিজেপি মহিলা মোর্চা। দুর্গাপুজো ও দীপাবলির পরেই ফের বাড়ি-বাড়ি দেওয়া হবে ‘অসুরদলনী মাতৃবন্দনা’ লেখা শুভেচ্ছা কার্ড। কার্ডের এক পাশে ‘আগমনির আরাধনায় বিজেপি মহিলা মোর্চা’-ও লেখা থাকবে এবং থাকবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি। সূত্রের খবর, সেই কার্ডে উৎসবের শুভেচ্ছার পাশাপাশি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পাশে থাকার আবেদনও জানানো হবে নাগরিকদের।

Advertisement

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘পুজো নিয়ে একতরফা হাইজ্যাকের রাজনীতি করছে তৃণমূল। অযথা বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে, আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালিয়ে বাঙালি এবং দুর্গাপুজোর থেকে আলাদা করার চেষ্টা চলছে। আমরাও বিকল্প পথ বার করেছি। পুজো নিয়ে রাজনীতি আমাদের উদ্দেশ্য নয়, আমরা আমাদের আদর্শকে পুজোর সঙ্গে যুক্ত করে মানুষের কাছে পৌঁছতে চাইছি।’’

রাজনৈতিক মহলের খবর, এত দিন মুখ্যমন্ত্রী পুজোর উদ্বোধন করে বা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় উপস্থিত থেকে জনসংযোগের যে পন্থা নিয়েছেন, তার পাল্টা পথ বার করতে বিজেপি এখন মরিয়া। তাই রাজ্য জুড়ে প্রতিটি মণ্ডলে বিজেপি যুবমোর্চা পুজো মণ্ডপের বাইরে বুক স্টল করে সেখানে এনআরসি ও ৩৭০ ধারা লোপের পক্ষে লেখা লিফলেট বিলি করবে। থাকবে এই সংক্রান্ত বই। আবার পুজো ও দীপাবলির ঠিক পরেই বিজেপি যুবমোর্চা রাজ্য জুড়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। যে কোনও বয়সের মানুষ তাতে অংশ নিতে পারবেন। যুবমোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকার জানান, কাশ্মীর, স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারত, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় থেকে নরেন্দ্র মোদী— এমন বিভিন্ন বিষয়ে আঁকা প্রতিযোগিতা হবে রাজ্য জুড়ে। ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু দাবি করেন, ‘‘এখন বলা হচ্ছে, জোর করে সব জায়গায় রামের নাম আনা হচ্ছে। যাঁরা বলছেন তাঁরা পুরাণকথা ও ভারতের ঐতিহ্য সম্পর্কে কিছুই জানেন না। রাম ১০৮ পদ্মে মা দুর্গার পুজো করেছিলেন। সেই থেকেই শরৎকালে দুর্গোৎসব। এই ভাবেই যুগ যুগ ধরে পদ্ম ও দুর্গাপুজো যুক্ত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল তো পারলে ঘাসফুল দিয়ে পুজো করে। তাই আমরা রেডিয়ো-টিভিতে নতুন স্লোগান— ‘পদ্ম ছাড়া দুর্গাপুজো হয় না’ প্রচার করছি।’’

একই সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদের নামে বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলিকে পুরস্কার দেওয়ার পরিকল্পনাও করেছে বিজেপি। পরিবেশবান্ধব, মহিলাদের ক্ষমতায়ন, আদিবাসী উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয়ের উপর সেরা পুজোগুলি পুরস্কৃত হবে। প্রথম বছরেই ১০৮টি পুজো কমিটি এতে নাম দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement