মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তিনি ‘না থাকলেও’ তৃণমূলে নতুন প্রজন্ম বিজেপিকে ‘ছেড়ে কথা বলবে না’ বলে হুঙ্কার দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার মালদহের ইংরেজবাজারের সুস্থানি মোড়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নব জোয়ার জনসংযোগ যাত্রায়’ যোগ দেন তিনি। সেই কর্মসূচির সভামঞ্চ থেকে তৃণমূলনেত্রী বলেন, “আমার পরেও জেনারেশন (প্রজন্ম) তৈরি করছি। ববিরা আছে, অভিষেকরা আছে, ওরা কি এমনি এমনি তৈরি হচ্ছে! যাতে আমার মৃত্যুর পরেও, এরা এদের (বিজেপি) গেঁথে দেয় ভাল করে।” তিনি বলেন, “দিদি চলে গেলে ‘আমরা কিছু করলাম না’, ‘বসে পড়লাম’—এ সব হবে না। আমি মনে করি, জীবন কখনও থেমে থাকে না, জীবন এগিয়ে যায়। চলার পথে বাধা এলে, বাধা উপড়ে দেয়।” মমতা বলেছেন, “কর্নাটক থেকে পতন শুরু হলে খুশি হব। ডোন্ট ভোট ফর বিজেপি!” তিনি বলেন, “ইডি, সিবিআইকে ভয় পাওয়ার দরকার নেই। কেন্দ্রে সরকার বদল হলে ইডি, সিবিআইয়ের এই সব কেস টিকবে না।”
যদিও ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলকে পাল্টা বিঁধেছে বিজেপি ও বামেরা। অভিষেকের কর্মসূচিতে মমতার যাওয়া প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে বিজেপির সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘দলটাই নেই ওখানে। অভিষেক নাবালক। সামলাতে পারছেন না।’’ জলপাইগুড়িতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের টিপ্পনী, ‘‘স্কুলে ছাত্রেরা দোষ করলে, অভিভাবকদের তলব করা হয়। ভাইপো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবু গেড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উত্তরবঙ্গের মানুষ তাঁর অভিভাবককে তলব করেছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছেন।’’
বুধবার মালতীপুর, রতুয়া হয়ে মানিকচকে জনসভা করে ইংরেজবাজারের অধিবেশনে যোগ দেন অভিষেক। দুপুরে মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠক করে সুস্থানি মোড়ে দলের কর্মসূচিতে বিকেলে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রায় এক ঘণ্টা সভায় থাকেন। বলেন, “অভিষেককে এক টানা কর্মসূচি করতে নিষেধ করেছিলাম। মানুষকে চেনার, মানুষকে জানার জন্য তাঁরা রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন। মানুষ নব জোয়ার কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।”
মমতা বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “বিজেপি দৃশ্য দূষণ, শব্দ দূষণ পার্টি। জুতো পায়ে পরে, মাথায় পরে না। কিম্ভূত কিমাকারেরা সব কিছুকেই কটাক্ষ করে। জোয়ারকে ভাটা বলে কটাক্ষ করছে। জোয়ার না আসলে উন্নয়ন কী করে আসবে।” দিলীপের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘রোজ মারপিট-গন্ডগোল হচ্ছে। কয়েকটা চোর, ডাকাত ও পুলিশ ছাড়া পার্টিতে কিছু নেই।’’ সেলিমের কটাক্ষ, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট না করে হাওয়া বুঝতে চাইছে তৃণমূল। হাওয়া হয়ে যাওয়ার আগে, হাওয়া বুঝতে চাইছে।’’
আজ, শুক্রবার মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে ভাঙন কবলিত এলাকা তাঁর পরিদর্শনের কথা রয়েছে, দাবি প্রশাসনের একাংশের।