আদিবাসী অঙ্কেই কি মামনি কর্মাধ্যক্ষ!

তিনি মামনি মান্ডি। শেষ মুহূর্তে পরিবর্তন না হলে আগামী শুক্রবার যিনি জেলা পরিষদের পরবর্তী শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ হতে চলেছেন। তৃণমূলের অন্দরের খবর, খোদ তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই নাকি এই পদ পেতে চলেছেন তিনি।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১১
Share:

প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মামনি মান্ডি। ফাইল চিত্র

তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে লেখা, ‘যেটা ভাগ্যে নেই, সেটা কাঁদলেও পাওয়া যায় না...’।

Advertisement

তিনি মামনি মান্ডি। শেষ মুহূর্তে পরিবর্তন না হলে আগামী শুক্রবার যিনি জেলা পরিষদের পরবর্তী শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ হতে চলেছেন। তৃণমূলের অন্দরের খবর, খোদ তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই নাকি এই পদ পেতে চলেছেন তিনি। শুরুতে পূর্তের স্থায়ী সমিতির সদস্য করা হয়েছিল তাঁকে। পরে স্থায়ী সমিতিগুলির পুনর্গঠন পর্বে পূর্ত স্থায়ী সমিতি থেকে পদত্যাগ করেন মামনি। তাঁকে আনা হয় শিক্ষা স্থায়ী সমিতিতে। মামনি বলছেন, ‘‘দিদিকে ভালবাসি। দিদি মানুষের জন্য কাজ করতে বলেছেন। শুনেছি একটা দায়িত্ব পাব। দল যে দায়িত্ব দেবে তা ভালভাবে পালন করব।’’

তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মেনে নিচ্ছেন, জেলায় এখন দলের আদিবাসী ‘মুখ’ এই মামনি। তাঁকে জেলার এক গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে শাসক দল যেন বার্তা দিতে চাইছে, তারা আদিবাসীদের জন্য কতটা দরদী! মামনি কেশিয়াড়ির মেয়ে। এখন কেশিয়াড়িতে দলের ‘দুর্দিন’। এক সময়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছিল, যে এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে এত খারাপ ফল হল, সেই এলাকার কাউকে জেলা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর কি দরকার! মমতার জেলা সফরের পরে অবশ্য সেই প্রশ্নে জল পড়েছে! জেলা সফরে এসে কেশিয়াড়িতে প্রশাসনিক সভা করেছিলেন মমতা। সেই সভায় মমতা বলেছিলেন, ‘‘অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, কেশিয়াড়িতে তো আপনারা পঞ্চায়েতটা হেরেছেন, আপনি কেশিয়াড়ি যাবেন কেন? আমি বলেছি, হারিয়েছি বলেই তো আমাকে বেশি করে যেতে হবে।’’ দলের কাছে স্পষ্ট হয়েছে, কেন মামনিকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ করা হচ্ছে।

Advertisement

বয়স মাত্র ২৮। বাড়ি কেশিয়াড়ির দুধেবুধেতে। পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। এ বার প্রথম নয়, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটেও জেলা পরিষদের আসন থেকে জিতেছিলেন মামনি। মমতা দলের তরফে কেশিয়াড়ি দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন শুভেন্দুকে। জেলা পরিষদের তরফে কেশিয়াড়ি দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহকে। দলের অনেকে মনে করছেন, মামনি জেলা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসার ফলে কেশিয়াড়ির মানুষজনের কাছে সরকারি সুযোগ-সুবিধে পৌঁছনো আরও সুবিধে হবে। সম্ভবত সেই অঙ্কেই মমতা কর্মাধ্যক্ষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মামনিকে। সভার দিনে মামনির সঙ্গে কয়েকদফায় কথা বলতে দেখা গিয়েছিল মমতাকে। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন শ্যামপদ পাত্র। প্রবীণ এই নেতাকে সরিয়ে জেলার শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ হওয়া সহজ ছিল না মামনির। মমতার নির্দেশে অবশ্য তা অতি-সহজ হয়ে গিয়েছে। টুঁ শব্দ নেই দলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement