Coronavirus in West Bengal

কেন্দ্র চাইলেও নৈশ কার্ফুতে নারাজ রাজ্য

রাজ্য সরকার নৈশ কার্ফুর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে প্রত্যেক নাগরিককে সংযত ও সতর্ক থাকার আবেদন জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:১৫
Share:

ফাইল চিত্র।

ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলাতে সে ওস্তাদ! সেই কোভিডের নতুন চরিত্র নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে বর্ষশেষের উৎসব নিয়ে রাজ্যকে সতর্ক করে দিল কেন্দ্র। বুধবার মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে প্রয়োজনে নৈশ কার্ফু জারির পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। এ দিনই নতুন চরিত্রের কোভিড সংক্রমণের মোকাবিলায় আদর্শ আচরণবিধি জানিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল। রাজ্য সরকার অবশ্য নৈশ কার্ফুর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে প্রত্যেক নাগরিককে সংযত ও সতর্ক থাকার আবেদন জানিয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, কোভিডের সুরক্ষা বিধি লঙ্ঘন করে উৎসব করা যাবে না।

Advertisement

কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশে সংক্রমণের হার কমলেও ইউরোপ ও আমেরিকায় নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। ইংল্যান্ডে নতুন চরিত্রের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাই গোটা দেশের জন্য নির্দিষ্ট আদর্শ আচরণবিধি তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রের আশঙ্কা, বর্ষশেষ ও বর্ষবরণের উৎসবে মাতবেন বহু মানুষ। ওই সব ‘সুপার-স্প্রেডার’ জমায়েতের উপরে কড়া নজর রাখতে হবে রাজ্যগুলিকে। প্রয়োজনে নৈশ কার্ফু জারির বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করুক রাজ্যগুলি। যদিও যাতায়াতে কোনও বাধা থাকবে না। স্থানীয় স্তরে সংক্রমণের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারি উপযুক্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে।

হাইকোর্টের নির্দেশ এবং কেন্দ্রের বার্তার পরে এ দিনই বৈঠক করেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। বৈঠক শেষে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নৈশ কার্ফুর মতো কঠোর ব্যবস্থার প্রয়োজন আমাদের রাজ্যে নেই। বাধ্যতামূলক ভাবে নয়, বরং পরিস্থিতি অনুযায়ী রাজ্যকে এ-সব বিবেচনা করতে বলেছে কেন্দ্র। পুলিশ, প্রশাসন ও নাগরিক সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে শান্ত ভাবে এবং সুরক্ষা বিধি মেনে উৎসব উদ্‌যাপন করলে সমস্যা হবে না। হাইকোর্ট-সহ সব কর্তৃপক্ষই বলছেন, নিয়ন্ত্রিত ভাবে উদ্‌যাপন করতে হবে।”

Advertisement

কিন্তু বর্ষশেষ ও বর্ষবরণের উৎসব কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার?

মুখ্যসচিব বলেন, “কোভিডের নতুন চরিত্র প্রকাশ্যে আসার পরে একটা উদ্বেগ রয়েছে দেশের সর্বত্র। তাই অকারণ উল্লাস পরিহার করাই ভাল। সরকার সকলকে আবেদন জানাচ্ছে, শান্ত, সংযত, নিরাপদ ভাবে বর্ষবরণের উৎসব হোক। পুলিশ সতর্ক থাকবে। পার্ক স্ট্রিট, ইকো পার্ক, ভিক্টোরিয়ার মতো যে-সব জায়গায় বেশি ভিড় হয়, সেখানে পুলিশের বুথগুলিকে সহায়তা কেন্দ্রে পরিণত করা হবে। মাস্ক বাধ্যতামূলক। কেউ মাস্ক না-পরলে ওই সহায়তা কেন্দ্র থেকে তা দেওয়া হবে। মাস্ক ছাড়া জটলা, জমায়েত করবেন না দয়া করে। প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে। সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। বিপদ থেকে দূরে থাকুন।”

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ দেবকিশোর গুপ্ত জানান, আরএনএ ভাইরাসের মিউটেশন হয়। পরীক্ষায় ভুয়ো নেগেটিভ রিপোর্ট আসছে কি না নজর রাখা জরুরি। আগের থেকে এই ভাইরাস আরও শক্তিশালী। ‘‘ফলে মানুষ যে-সব সুরক্ষা বিধি ভুলতে বসেছেন, সেগুলি তাঁদের মনে করানো জরুরি,” বলেন দেবকিশোরবাবু।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement