একসঙ্গে: ধর্মতলার এক সভায় বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী ও আব্দুল মান্নান। সোমবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারানোই মূল লক্ষ্য। তার জন্য প্রয়োজনে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার কথা এ বার প্রকাশ্যে সরাসরিই জানিয়ে দিল সিপিএম।
সিপিএমের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে দলের হাইকম্যান্ডের কাছে রিপোর্ট পাঠাতে চলেছে প্রদেশ কংগ্রেস। শাসক দল তৃণমূল অবশ্য বিরোধী দুই দলকে কটাক্ষই করেছে।
সিবিআইকে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ন্যক্কারজনক আচরণে’র প্রতিবাদে সোমবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল সিপিএমের। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী যে ভাবে রাফাল দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে সিবিআইয়ে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের বিষয়টি এক সূত্রে গেঁথে প্রচারে নেমেছেন, এ দিন সেই সুরেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সিপিএম নেতারা। ওই সমাবেশেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা দলের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘সমদূরত্ব কোনও ভাবেই আমাদের নীতি নয়। বিজেপি এমন একটা দল, যাদের সঙ্গে কংগ্রেস বা অন্য কারওরই তুলনা হয় না। এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যেখানে আমরা নেই কিন্তু কংগ্রেস আছে, সেখানে কংগ্রেসকেই ভোট দিতে হবে। বিজেপিকে হারাতেই হবে।’’ কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে সিপিএমের অন্দরে নানা বিতর্ক সাম্প্রতিক কালে হয়েছে। কিন্তু প্রকাশ্যে এতটা স্পষ্ট বক্তব্য তাদের তরফে এই প্রথম।
লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল এখনও চূড়ান্ত করেনি সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। আলিমুদ্দিন অবশ্য কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েই কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপ দাবি করেছে। সূর্যবাবু এ দিন বাংলায় তাঁদের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘এখানে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরোধী ভোটকে একজোট করতে হবে। যেখানে আমাদের শক্তি আছে, আমরা লড়ব। ধর্মনিরপেক্ষ অন্য দলকেও জায়গা ছাড়তে হবে। কোথায় কী ছাড়া হবে, সে সব পরে আলোচনা হবে।’’ বাম শরিকদের একাংশের আপত্তি সত্ত্বেও আলিমুদ্দিন যে কংগ্রেসের জন্য আসন ছাড়তে প্রস্তুত, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্যে সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট।
সূর্যবাবুর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গত বিধানসভা ভোটে আমরা একসঙ্গেই লড়েছিলাম। পরে সিপিএম সেই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে এসেছিল। এখন তারা যদি বুঝে থাকে বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেসকে দরকার, সেটা ভাল কথা। আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে আমাদের দিকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিল্লি নেবে।’’ এআইসিসি নেতৃত্বকে সিপিএমের এই অবস্থান জানাতে চলেছেন সোমেনবাবুরা।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘এ রাজ্যে ‘সিপিএম-কংগ্রেস কোথায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে? ওরা তো আমাদের বিরুদ্ধেই লড়ছে! পঞ্চায়েত ভোটেও জোট করেছিল।’’