—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে প্রায় দু’মাস পরেও তৃণমূল কংগ্রেসের ‘সন্ত্রাসের’ কারণে বিজেপির বেশ কিছু লোকজন এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি বলে অভিযোগ। ওই ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের অনেকেই রয়েছেন কলকাতায় মাহেশ্বরী ভবন, মুরলীধর লেনে বিজেপির পুরনো রাজ্য দফতর-সহ নানা জায়গায়। ঘরছাড়ারা-সহ বিজেপি কর্মীদের একাংশের কথায় এক দিকে যেমন তৃণমূলের সঙ্গে লড়তে হলে দলের ‘কৌশলে’ জোর দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠে আসছে, তেমনই বিজেপির সাংগঠনিক খামতির কথাও তাঁরা বলছেন।
মুরলীধর লেনে দলীয় দফতরে আশ্রয় নিয়েছেন কুলতলির এক প্রৌঢ়। তাঁর অভিযোগ, “ভোটের দিন আটকে রেখে দেয়, বোমাবাজি করে। লোকসভায় অনেকেই ভোট দিতে পারেননি।” কাছেই থাকা আরও এক জন ঘরছাড়া কর্মী এই সূত্রেই স্বীকার করছেন তাঁদের সংগঠনিক দুর্বলতার কথা। তাঁর বক্তব্য, “তৃণমূলের অত্যাচার রুখতে পারলে ভোটের ফল অন্য রকম হত। সন্ত্রাস আটকাতে না পারলে আমরা জিতব না।” ভোটের ফলপ্রকাশের পরে দলের অন্দরে ‘ঐকমত্যের অভাব’ যে প্রকাশ্যে এসেছে, সে কথাও উঠে আসছে বিজেপির মহিলা মোর্চার কয়েক জন কর্মীর বক্তব্যে। তাঁদের কথায়, “আমরা ঘরের লোকের সঙ্গে লড়তেই ব্যস্ত। বাইরের লোকের সঙ্গে লড়ার সময় কোথায়?”
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের সঙ্গে লড়াতে হলে কৌশলে জোর দেওয়ার কথা বলছেন বিজেপি কর্মীদের অনেকেই। এক কর্মীর বক্তব্য, “তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূলের কৌশলে লড়তে হবে। খালি কর্মসূচি করে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়া যাবে না।’’ যদিও পথে থাকাটাও যে অত্যন্ত জরুরি, সেটাও মানছেন তাঁরা। সূত্রের খবর, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের একটি মন্তব্যের বিরুদ্ধে আগামী ৩০ জুলাই রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে সভা করার কর্মসূচি নিয়েছে কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে থাকার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। যদিও সভার জন্য সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয় অনুমতি এলেও এখনও লালবাজারের অনুমতি মেলেনি।
লড়াইয়ের অভিমুখ নিয়ে কর্মীদের দাবি প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “সব জেলাতেই ‘সেফ হাউজ়’ চলছে। নির্বাচনে জয়-পরাজয় যা-ই হোক, সংগঠন তা থেকে শিক্ষা নেয়। দলের গঠনতন্ত্রের মধ্যে থেকেই আমরা আগামী দিনে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।” তবে সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “সম্পূর্ণ সাংগঠনিক ব্যর্থতা। কিছু নেতার কথা শুনে ওঁরা (বিজেপি কর্মীরা) এমন প্ররোচনা ছড়িয়েছেন যে, এখন এলাকায় মুখ দেখাতে পারছেন না। তৃণমূল কিছু করেনি।”