Narendra Modi

‘বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো’

গাজিপুরের অফিসে বসে মিলিটারির কেরানি শ্যামাচরণ লাহিড়ী মশাই তাঁর ইংরেজ উপরওয়ালার স্ত্রীর অসুখ সারিয়েছিলেন যোগবলেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২১ ০৫:৪৩
Share:

হঠযোগে শরীরের ক্লেশমুক্তি। অলৌকিক যোগে স্থানকালের নিয়ম অতিক্রম করে সূক্ষ্ম শরীরে বিচরণ। ক্রিয়াযোগে জন্ম-জন্মান্তরের সাধনার ফল বয়ে বেড়ানো। যোগের মহিমার অন্ত নেই সত্যিই!

Advertisement

সোমবার, সপ্তম বিশ্ব যোগ দিবসে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সংযোজন, ‘দুঃখমুক্তির তত্ত্ব’! মানসিক স্বাস্থ্যে যোগের যোগ-প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “দুঃখ থেকে বিয়োগের মুক্তিই হল যোগ!”

শোনা যায়, গাজিপুরের অফিসে বসে মিলিটারির কেরানি শ্যামাচরণ লাহিড়ী মশাই তাঁর ইংরেজ উপরওয়ালার স্ত্রীর অসুখ সারিয়েছিলেন যোগবলেই। মেমসাহেব তখন বিলেতে। পরে সেরে উঠে এ দেশে এসে স্বামীর অফিসের সহকর্মীটিকে দেখে মহিলা হতবাক! রোগের ঘোরে এই লোকটিকেই তো তিনি দেখেছিলেন। প্রাচীন মুনি-ঋষিদের জগতের বাইরে গেরস্ত সংসারীজীবনে যোগকে জনপ্রিয় করার পথিকৃৎ লাহিড়ী মশাইয়ের জীবনের যোগ আবার মোদীর সংসদীয় ক্ষেত্র কাশীতেই রয়েছে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের বিয়োগ-তত্ত্ব অবশ্য রসিক বাঙালির অভিধানে যোগ-বিয়োগের অন্য অঙ্কের কথাও মনে পড়াচ্ছে। কারও কারও স্মৃতিতে অমলিন, রূপদর্শীর কলমে ব্রজরাজ কারফর্মার 'বিয়োগ-শিক্ষার ক্লাস'। সেই ব্রজদা যিনি নাকি যোগবলে পর পর ইউরেনাস, নেপচুন, প্লুটো ঘুরে বিয়োগবলে পৃথিবীতে নেমে এসেছিলেন।

ব্রজদার একাদশতম গুল্পে আছে, সোভিয়েট মহাকাশচারী গ্যাগারিনেরও ঢের আগে যোগবলে ব্রজদার ব্যোমমার্গে সফর-কাহিনি। তাঁর কসরত বলতে পাশ্চাত্যের ‘হাইয়ার টেকনিককে’ ছেলেখেলা প্রতিপন্ন করা খাঁটি ভারতীয় শৈলী। ‘সেরেফ যোগবল’। কিন্তু ব্রজদা পরের চাকরি করেন। আপিসে সীমিত ছুটিছাটা। তায় ঘরে গৃহিণী! তাই মুনিঋষিদের মতো শুধু ঊর্ধ্ব থেকে তদূর্ধ্ব মার্গে ভ্রমণেই তাঁর চলবে না। একেলে ছাপোষা জীবনের এই দাবিদাওয়া থেকেই ব্রজদার উদ্ভাবন বিয়োগ-তত্ত্ব। যোগবলে পর পর তিন গ্রহ ঘুরে তিনি বিয়োগ বল প্রয়োগ করলেন। নেমে এলেন কলকাতার কাছেই এক সরকারি বনাঞ্চল মানে তাঁর সাধনার ‘তপোবনে’! সেখান থেকে ট্রেনে কলকাতা ফিরতে যা সময় লেগেছিল, প্লুটো থেকে পৃথিবীতে ফিরতে নাকি তাঁর ঢের কম সময় লাগে।

পরশুরামের বিরিঞ্চিবাবার গল্পেও বাবাজীর কৃপাধন্য মেকীরাম আগরওয়ালা যুদ্ধের আগে নাইন্টিন ফোর্টিনে ঘুরে জলের দরে সোনা কিনে বড়লোক হয়েছিলেন।

যোগে দুঃখমুক্তি বলতে এমনই নানা জল্পনায় মশগুল হয়েছে বাঙালি। কারণ, এখনও টিকার 'ট' জোটেনি দেশের শতকরা ৮০ ভাগ লোকের। চোখ রাঙাচ্ছে কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। এর মধ্যে যোগ-দিবসে দুঃখমুক্তির যোগটুকু ‘সান্ত্বনার প্রলেপ’ বলে ধরা যেতেই পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement