ছবি: পিটিআই
পঞ্চান্ন বছর পরে খুলে গেল দুই বাংলার মধ্যেকার হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ। এবং সেই ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এলেন বাঙালি সাজে। এমনকি, পিছনে রইল কোচবিহার রাজবাড়ির ছবিও।
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখে ততই উঠে আসছে বাংলা ও বাঙালির নানা বিষয়। এর আগে তাঁর মুখে ‘গুরুবর’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম শোনা গিয়েছিল। উজ়বেকিস্তানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে মোদীর পিছনে দেখা গিয়েছিল দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের ছবি। এ বারে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথের উদ্বোধনে তিনি এলেন বাঙালি সাজে। পরনে তসরের বাংলা পাঞ্জাবি, কলকা পাড়ের শাল। সে শালও কাঁধে ফেলা বাঙালি কায়দায়। ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। তার পরেই চালু হয়ে গেল এই রেলপথ।
হলদিবাড়ি হয়ে বাংলাদেশের চিলাহাটি দিয়ে যে রেলপথটি গিয়েছে, সেই পথে স্বাধীনতার আগে চলত দার্জিলিং মেল। দেশ ভাগের পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে পথটি চালু ছিল। কিন্তু ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের যুদ্ধের পরে পথটি পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। গত ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সময়ে এই নিয়ে নতুন করে কথা হয় বাংলাদেশের সঙ্গে। সূত্রের খবর, রেলপথটি কী ভাবে চালু করা যায়, তা নিয়ে এর আগে থেকেই ভাবনাচিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই সময়ে রেল মন্ত্রক ছিল তৃণমূলের হাতে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার কোচবিহারের জনসভা থেকেও এই বিষয়টির উল্লেখ করেন।
জেলাবাসী একাংশের বক্তব্য, হলদিবাড়ি কোচবিহার জেলায়, তাই জেলার ঐতিহ্য রাজবাড়ির ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। জেলার তৃণমূল নেতাদের অনেকের দাবি, এ সবই ভোটের আগে মোদীর বাঙালি মন জয়ের চেষ্টা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই এ দিনের ভিডিয়ো বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামিল করা হয়নি বলে অভিযোগ তৃণমূলের। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর দাবি, “প্রধানমন্ত্রী যতই মেকআপ করুন, তিনি বাঙালি হতে পারবেন না। বাঙালির কৃষ্টি-সংস্কৃতি তাঁর পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।’’
বিজেপির অবশ্য দাবি, প্রধানমন্ত্রী যে আদতে বাঙালি সাংস্কৃতিক পরিবেশের সঙ্গে স্বচ্ছন্দ, সেটাই ফের বুঝিয়ে দিয়েছেন। জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামীর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তো সারা দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলারও এক জন।’’