শান্তিনিকেতনের কলাভবনে নন্দন মেলার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত পডু়য়ারা। নিজস্ব চিত্র
১ ডিসেম্বর থেকে কলাভবনে শুরু হচ্ছে দু’দিনের ঐতিহ্যবাহী নন্দনমেলা। এখন তুঙ্গে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা।
এই মেলা প্রথম শুরু হয় ১৯৭৩ সালের ১ ডিসেম্বর। যে বছর মেলা শুরু হয়েছিল তার ঠিক আগের বছর কলাভবনের এক ছাত্রের কলাভবন চত্বরে পা-কেটে গিয়েছিল। সেই সময় চিকিৎসার খরচ জোগাতে বেশ সমস্যা হয়েছিল। যদিও পরে ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক সকলে চাঁদা তুলে ছাত্রকে সুস্থ করে তোলেন। তখন সকলে ঠিক করেন কলাভবনের ছাত্রছাত্রীরা সারাবছর যে সমস্ত জিনিস বানাবেন, তা দিয়ে মেলার আয়োজন করা হবে। লভ্যাংশ বাবদ যা আয় হবে, তা কলাভবনের একটি ফান্ডে জমা করা হবে। সেই টাকা দুঃস্থ ছেলে-মেয়েদের সাহায্যের জন্য ব্যবহৃত হবে।
সেই বছর থেকে তৈরি করা হয় ফান্ড। নন্দনমেলায় জিনিস বিক্রি করে যা আয় হয়, তা এই ফান্ডে জমা করা হয়। একই সঙ্গে কলাভবনের শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর জন্মদিন পালন করা হয় ৩ ডিসেম্বর। এ বছরও ১ থেকে ২ ডিসেম্বর মেলা চলবে। ৩ ডিসেম্বর নন্দলাল বসুর জন্মদিন পালন করা হবে। তাই ভবন চত্বরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। কলাভবনের বর্তমান পড়ুয়া থেকে প্রাক্তনী, সকলে কাজে হাত লাগিয়েছেন। এ বারও কলাভবনের ৬টি বিভাগের আলাদা আলাদা করে মেলায় স্টল রাখা হচ্ছে। কিছু প্রদর্শনীও থাকছে।
কলাভবনের বিভিন্ন বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের হাতের তৈরি বিদেশি খাবারের স্টল থাকছে মেলাতে। বাঁশ, খড়, দড়ি, খবরের কাগজ, চট প্রভৃতি দিয়েও মেলাপ্রাঙ্গণকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। এ বছরও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। মেলা দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ আসেন। অনেকে এই মেলাকে প্রাক্তনীদের মিলন মেলাও বলে থাকেন। কলাভবনের দুই ছাত্র সন্দীপন সেন, জয় মণ্ডলরা বলেন, ‘‘আমাদের আশা এ বারও মেলা জমবে।’’ সেরামিক বিভাগের অধ্যাপক অনুপম চৌধুরী বলেন, ‘‘আশা করছি সকলের সহযোগিতায় মেলা সুন্দর হবে।’’