রাস্তায় বসে বিক্ষোভ অধীর চৌধুরীর। মঙ্গলবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।
সোমবার রাতে কংগ্রেস কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগের জেরে সোমবার রাতেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ। ধৃতদের মঙ্গলবার সকালে কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করা হলে বিচারক দু’জনকে চার দিনের পুলিশি হেফাজত এবং বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী কৃষ্ণনগরে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখান।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে নাকাশিপাড়া ব্লকের হরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিপুর এলাকায় কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে আচমকা হামলা চালানো হয়। অভিযোগ, বাড়ি লক্ষ করে বোমা ও ছররা গুলি চালায় তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। গুলির আঘাতে তিন জন শিশু-সহ মোট ১৫ জন আহত হয়।
স্থানীয়েরা জখমদের বেথুয়াডহরি হাসপাতালে নিয়ে যান। ছ’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে রাতেই চিকিৎসক তাঁদের কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। মঙ্গলবার ফের কৃষ্ণনগর থেকে দু’জনকে কলকাতায় পাঠাতে হয়। আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে নাকাশিপাড়া থানায় ওই বুথের তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য বাদশা মণ্ডল-সহ বারো জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আহত রেজিয়া বিবি বলেন, ‘‘আমরা বসে গল্প করছিলাম। সেই সময়ে আমাদের উপরে হামলা চালানো হয়।’’
মঙ্গলবার দুপুরে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। শক্তিনগর হাসপাতালে গিয়ে তিনি জখম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে যথার্থ তদন্তের দাবিতে কৃষ্ণনগর কালেক্টর মোড়ে কংগ্রেস কর্মীরা অধীরের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ চলার পরে পুলিশ সুপারের আশ্বাসে তাঁরা বিক্ষোভ তুলে নেন। এ দিন অধীর অভিযোগ করেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের শুরু থেকেই রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস চলছে। তৃণমূলের হার্মাদ বাহিনী ও পুলিশের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে।’’
স্থানীয় কংগ্রেস নেতা আনিসুর রহমান বলেন, ‘‘কংগ্রেসকে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি। সেই সময়েও হামলা চালানো হয়। তার পরেও কংগ্রেস কর্মীরা লড়াই করে যাচ্ছেন। তাই ভয় পেয়েছে ওরা। তাই বিরোধী-শূন্য করতে নেমে ছয় মাসের শিশুও রেহাই পাচ্ছে না।’’
নাকাশিপাড়া ব্লকের বিধায়ক তথা তৃণমূলের নদিয়া জেলার সভাপতি কল্লোল খাঁ ঘটনার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস কর্মীরা ওখানকার পরিবেশ উত্তপ্ত করে। পরে তৃণমূলের কর্মীরা জড়িয়ে পড়ে। তবে এই ঘটনা তৃণমূল কখনও সমর্থন করে না। যারাই জড়িত থাকুক, পুলিশ তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’