ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা গ্রহণ করল না শান্তিপুর কলেজের পরিচালন সমিতি। সমিতির সদস্যরা আগের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চয়ন ভট্টাচার্যকেই দায়িত্ব সামলানোর জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু অসুস্থ চয়নবাবু এই শরীর নিয়ে কতটা দায়িত্ব সামলাতে পারবেন তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কলেজের শিক্ষক মহলেই। সোমবার পরিচালন সমিতির এই সিদ্ধান্তের কথা চয়নবাবুকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছেন কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি ও রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়। পার্থবাবু বলেন, ‘‘চয়নবাবুর পদত্যাগপত্র হাতে পেয়ে রবিবার পরিচালন সমিতির জরুরি বৈঠক ডেকেছিলাম। বৈঠকে ১০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ঠিক হয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়া-সহ অন্যান্য প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন শেষ না হওয়া পর্যন্ত চয়নবাবুকেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেই মতো আমি ফোনে তাঁকে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। এ বার চিঠি দিয়ে জানানো হবে।”
কিন্তু এতেও কি কলেজের অচলাবস্থা কাটবে? প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। কারণ তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার পাশাপাশি পদত্যাগ করার অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে চয়নবাবু শারীরিক অসুস্থতার কথাও লিখেছিলেন। শুধু তাই নয় ১ সেপ্টেম্বর সভাপতির হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেওয়ার পরের দিন থেকে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আর কলেজে আসছেন না। ফের তাঁর উপরে কলেজের দায়িত্ব দিলেও তিনি তা কতটা অন্তরিক ভাবে সামলাবেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন তাঁরই সহশিক্ষকরা। বিশেষ করে তিনি যখন আর মাত্র চার মাস পরে অবসর নেবেন।
চয়নবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমাকেই আবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমার যা শারীরিক অবস্থা তাতে সেই দায়িত্ব আমি কীভাবে সমলাব তা বুঝতে পারছি না।’’ তিনি বলেন, ‘‘তা ছাড়া আমি ছ’মাসের জায়গায় পনেরো মাস দায়িত্ব সামলেছি। তার পরেও কেন আমাকে অব্যহতি দেওয়া হবে না, বুঝতে পারছি না।’’
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, শেষ পর্যন্ত কেন সেই চয়নবাবুকেই দায়িত্ব দেওয়া হল? কেন পরবর্তী ‘সিনিয়র’ শিক্ষক দায়িত্ব নিলেন না? কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, চয়নবাবুর পরে ‘সিনিয়র’ শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব সামলানোর কথা রতনেশ মিশ্রর। কিন্ত তিনি কলেজের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তাঁর বাড়িতে বোমা পড়ে। স্বয়ং পার্থবাবুই অভিযোগ করেন, কলেজে ভর্তির দ্বিতীয় কাউন্সেলিং যাতে মেধা তালিকা অনুযায়ী না হয় তার জন্য ভয় দেখাতেই রতনেশবাবুর বাড়িতে বোমা ছোড়া হয়েছে। এই ঘটনার পরে রতনেশবাবু দায়িত্ব না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আগে তো আমাকে প্রস্তাব দেওয়া হোক। তার পর পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব।’’