মঞ্চে সময়ে আসেননি অভিনেতা, ভাঙচুর-লুঠ

টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেতা সময়ে না আসায় অনুষ্ঠান-মঞ্চে ভাঙচুর, লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার রানাঘাট শহরে। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা জানান, কমপক্ষে কুড়ি লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যশ দাশগুপ্ত নামে (‘বোঝে না সে বোঝে না’ খ্যাত) ওই অভিনেতার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৫৯
Share:

টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেতা সময়ে না আসায় অনুষ্ঠান-মঞ্চে ভাঙচুর, লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার রানাঘাট শহরে। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা জানান, কমপক্ষে কুড়ি লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যশ দাশগুপ্ত নামে (‘বোঝে না সে বোঝে না’ খ্যাত) ওই অভিনেতার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

Advertisement

গত ৫ ডিসেম্বর থেকে রানাঘাট দে-চৌধুরী কালচারাল অ্যান্ড সোশাল ফোরামের উদ্যোগে স্থানীয় হ্যাপি ক্লাবের মাঠে পঞ্চম বার্ষিক নদিয়া উৎসব শুরু হয়েছে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই উৎসব চলার কথা ছিল। প্রতিদিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। তারই অঙ্গ হিসাবে বুধবার রাতে ‘বোঝে না সে বোঝে না’ খ্যাত (অরণ্য সিংহ রায় চরিত্র) অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের আসার কথা ছিল। তাঁকে দেখার জন্য কমপক্ষে দশ হাজার দর্শক ১৫ টাকার টিকিট কেটেছিলেন। রাত ৯টায় মঞ্চে আসার কথা ছিল যশের। কিন্তু, দশটা বেজে গেলেও তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। জনতাকে শান্ত করতে উদ্যোক্তারা মাইকে বারকয়েক ঘোষণা করেন, তিনি নাকি কাছেকাছিই এসে গিয়েছেন। একবার মোবাইলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে দর্শকদের শোনানো হয়, “আমি রাস্তায় রয়েছি। আসছি।”

শেষমেশ ১০টা নাগাদ দর্শকদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে শুরু করে। বেশ কয়েকবার চিৎকার-চেঁচামেচি হয়। ক্রমশ হই-হট্টগোলের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরে শুরু হয় ইট বৃষ্টি। সেই ইট মঞ্চ এবং মঞ্চের সামনের দিকে বসে থাকা দর্শকদের মাথার উপর পড়তে শুরু করে। দর্শকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সেই সময় বেশ কয়েকজন পড়ে যান। এরপরই শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি। কয়েকজন আবার বসার চেয়ার নিয়ে চলেও যান বাড়ি।

Advertisement

সবশেষে আলো ভাঙতে শুরু করে উত্তেজিত জনতা। সঙ্গে চলে লুঠপাট। আলো, মাইক, সাউন্ড সিস্টেমের যন্ত্র নিয়ে পালাতে শুরু করে জনতার একাংশ। বেগতিক বুঝে স্টল বন্ধ করে পালাতে থাকেন দোকানদাররা। ততক্ষণে মাঠে এসে পৌঁছেছে ব্যাপক পুলিশ বাহিনী। মণ্ডপের চারিদিকে খুলে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে মণ্ডপের এক দিকে তাবুতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। খবর পেয়ে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তার আগেই অবশ্য জল দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়।

উৎসব কমিটির সভাপতি তথা রানাঘাটের পুরপ্রধান পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাত ন’টার সময় আসার কথা ছিল ওই শিল্পীর। সময় মতো না আসায় ওই ঘটনা ঘটেছে। আমাদের ভাগ্য ভাল যে কোনও জীবনহানি ঘটেনি। তবে বাকি সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি আমরা। ওই শিল্পীর জন্য কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হল। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ওঁর বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করব।” যশ দাশগুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, যাঁর মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছিল, সেই পুনম ঝা বলেন, “রাস্তা খারাপ থাকার কারণে পৌঁছতে দেরি হয়েছিল যশের। পরে অনুষ্ঠান মঞ্চের কাছে পৌঁছে উনি দেখেন গণ্ডগোল হচ্ছে। তাই স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে ফিরে এসেছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement