১৫ বছরের প্রেমিকের হাত ধরে সংসার পাতবে বলে বেরিয়ে পড়েছিল কৃষ্ণনগরের ১৪ বছরের কিশোরী। নানা পথ ঘুরে, নানা জায়গায় ঠোক্কর খেতে-খেতে অবশেষে বর্ধমান স্টেশনে আলাপ হওয়া এক ‘কাকু’র হাত ধরে পৌঁছে যায় বিহারের মতিহারি এলাকায়। সেখানে একটি নাচের দলে বিক্রি করে দেওয়া হয় দু’জনকেই। শেষ পর্যন্ত বিহারের সেই ডেরা থেকে মোবাইলে যোগাযোগ করে ফিরে আসতে পেরেছে কিশোর-কিশোরী। সোমবার সকালে দু’জনকে নদিয়ায় নিয়ে আসে জেলা পুলিশ। এসপি সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, ‘‘বিয়ে করবে বলে ওরা চলে গিয়েছিল। রাস্তায় একজনের মাধ্যমে পৌঁছে যায় বিহারে। সেখানে একটি নাচের দলে তাদের বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে আমাদের। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ওদের উদ্ধার করেছি।” ছাত্রীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে কৃষ্ণনগর মহিলা থানার পুলিশ ছাত্রটিকে গ্রেফতার করে। এর আগেই ছাত্রের বাবাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
গত বছর ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় পূর্ব পরিকল্পনা মতো সাইকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিল কৃষ্ণনগর হাইস্কুলের ওই ছাত্র। পাড়ার মোড় থেকে সাইকেলের সামনে বসিয়ে নিয়েছিল তার অষ্টম শ্রেণির প্রেমিকাকে। কিশোরী জানিয়েছে, সেই রাতে তারা পৌঁছে যায় চাপড়াতে। স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে এক হাজার টাকা দিয়ে সাইকেলটা বেচে ভোরের বাস ধরে যায় রানাঘাট। সেখান থেকে ট্রেন পাল্টে পাল্টে মেমারি স্টেশনে পৌঁছয়। রাতে সেখানে থেকে পরদিন যায় বর্ধমান। এরপর ছ’শো টাকা দিয়ে দু’জনে দু’টো মোবাইল বিক্রি করে দেয়। সেই টাকাও ফুরিয়ে গেলে প্রায় ছ’হাজার টাকায় আংটি বেচে দেয় কিশোরী। এরপর শিয়ালদহ থেকে তারাপীঠ থেকে বহরমপুর এমনকী কৃষ্ণনগর ঘুরে ফের বর্ধমানে আসে বলে পুলিশদের জানিয়েছে ওই কিশোরী। বর্ধমান স্টেশনেই খোকন দাস নামে এক ব্যক্তি মতিহারি জেলার পিপরাপোঠা এলাকায় তাদের ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। সেখানে অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকলে বিপদ বুঝে স্থানীয় এক যুবকের সাহায্যে মোবাইলে কিশোরীর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সঙ্গী কিশোর। সেই ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ উদ্ধার করে দু’জনকে।