এভাবেই তৈরি হচ্ছে নকল দুধ।
নকল দুধ তৈরির কারবার চালানোর অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খোঁজ চলছে ওই কারখানার মালিক-সহ আরও এক অভিযুক্তের। সোমবার সন্ধ্যায় আচমকা নবদ্বীপ ও বর্ধমানের সীমান্তে নবদ্বীপ রেলগেট লাগোয়া কলাবাগান এলাকায় ওই কারখানায় হানা দেয় পুলিশ। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম সুব্রত ঘোষ, সেন্টু ঘোষ ও বেণুলাল নাথ। এদের মধ্যে প্রথম দু’জন কলাবাগানের ওই কারখানার কর্মচারী। তৃতীয় জনকে পারুলিয়া থেকে ধরা হয়েছে। সেও ওই ধরনের কারখানা চালানোয় অভিযুক্ত। মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে দুই কর্মচারীর ১১ দিলের জেল হেফাজত ও তৃতীয় জনের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “সবার চোখের সামনে দিনের পর দিন নকল দুধের কারবার চলছে। হাতেনাতে ধরেছি। যাঁরা নিজের বাড়িতে ওই কারখানা চালাচ্ছেন তাদের সাজা হওয়া জরুরি।”
সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্যের অ্যাডিশনাল মিল্ক কমিশনার ও কালনার এসডিপিওকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান মন্ত্রী। নবদ্বীপ থানা ও নাদনঘাট থানার পুলিশও সঙ্গে ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায়, একটি অস্বাস্থ্যকর ঘরে আটটি সিমেন্টের বড় বড় চৌবাচ্চার মধ্যে নকল দুধ তৈরি চলছে। আশপাশে ছড়িয়ে রয়েছে নানা ঘরনের রাসায়নিক। চৌবাচ্চার গায়ে থিকথিক করছে কেঁচো, মাকড়সা ও আরও নানা পোকা। পচা ছানার জলের গন্ধে টেকা দায় সেখানে।
অ্যাডিশনাল মিল্ক কমিশনার সোমদত্ত দালিয়া বলেন, “এটা আসলে একটা বরফ কল। বেআইনি ভাবে, কোনও রকম সরকারি অনুমোদন ছাড়াই নকল দুধের কারবার চলছিল। সাধারণ টিনে যে ভাবে দুধ রাখা হচ্ছিল তা মারাত্মক। এফআইআর করেছি। কারখানাটিও সিল করে দেওয়া হচ্ছে। দুধের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।” কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, “নবদ্বীপের পরে পারুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে বেণুলাল নাথ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরদ্ধে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দুধ তৈরির অভিযোগ রয়েছে।” কলাবাগানে যে কারখানায় নকল দুধ তৈরি চলছিল তার সামনেই রয়েছে নবদ্বীপ শহর সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের দফতর। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, ওই দফতরের পিছনেই বছরের পর বছর ধরে এমন কারবার চলছে। অথচ প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই।