তৈরি করেই দায় শেষ, বেহাল রাস্তা

রাস্তা একটা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে আর সংস্কারের দিকে নজর নেই কারও। পিচের চাদর উঠে গিয়ে খানাখন্দে ভরে গিয়েছে বেথুয়ডহরির নিচুবাজার থেকে বানগড়িয়া সেরিকালচার ফার্ম পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তাটি। নাকাল গ্রামবাসীরা। তবে রাস্তা সংস্কারের লক্ষণ নেই। বছর কুড়ি আগে ২৭ লক্ষ টাকা খরচ করে এই রাস্তাটি তৈরি করেছিল বেথুয়াডহরি রেগুলেটেড মার্কেট কমিটি। মূলত স্থানীয় কৃষকদের খেতের ফসল বাজারে নিয়ে আসার সুবিধার জন্যই এই রাস্তা নির্মাণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নাকাশিপাড়া শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:০৪
Share:

রাস্তা একটা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে আর সংস্কারের দিকে নজর নেই কারও। পিচের চাদর উঠে গিয়ে খানাখন্দে ভরে গিয়েছে বেথুয়ডহরির নিচুবাজার থেকে বানগড়িয়া সেরিকালচার ফার্ম পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তাটি। নাকাল গ্রামবাসীরা। তবে রাস্তা সংস্কারের লক্ষণ নেই।

Advertisement

বছর কুড়ি আগে ২৭ লক্ষ টাকা খরচ করে এই রাস্তাটি তৈরি করেছিল বেথুয়াডহরি রেগুলেটেড মার্কেট কমিটি। মূলত স্থানীয় কৃষকদের খেতের ফসল বাজারে নিয়ে আসার সুবিধার জন্যই এই রাস্তা নির্মাণ। তাই খিদিরপুর, গলাইদড়ি, জালসুখা, বানগড়িয়া, দুর্গাপুর, নাংলা, বেলেডাঙার মতো অনেকগুলি গ্রামের মাঝ বরাবর চলে গিয়েছে ওই রাস্তা।

তবে এটি যে শুধু কৃষক বাজারে যাওয়ার রাস্তা, তা নয়। পিছিয়ে পড়া খিদিরপুর, বানগড়িয়া, নাংলা প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দাদের স্কুল, কলেজ, ব্লক প্রশাসনিক কার‌্যালয় বা অন্য যে কোনও প্রয়োজনে আসতে নাকাশিপাড়ায়। তার জন্যও একমাত্র ভরসা এই রাস্তাটি।

Advertisement

গলাইদড়ির বাসিন্দা জয়না বিবি বলেন, ‘‘সামান্য অসুখ-বিসুখের হলেও যেতে হয় নাকাশিপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বাসের কোনও ব্যবস্থা নেই। রিকশা বা ভ্যানই ভরসা। কিন্তু ওই রাস্তার যা অবস্থা, গর্তে পড়ে ভ্যান, রিকশায় যা ঝাঁকুনি হয়, তা সহ্য করা যে কোনও রোগীর পক্ষে মুশকিল।”

প্রায় একই কথা জানালেন কলেজ পড়ুয়া খবিরুদ্দিন শেখও। তিনি বলেন, “সাইকেলে চেপে চার কিলোমিটার রাস্তা পেরোনো যেন নরক যন্ত্রণার সামিল।” কৃষকদের সুবিধার জন্য প্রাথমিক ভাবে খোয়া ইটের রাস্তা তৈরি হয়েছিল। তারপর পিচ ঢালাইও করা হয়। কিন্তু প্রায় ২০ বছর কেটে গেলও আর কোনও দিন পিচ পড়েনি ওই রাস্তায়। ফলে সংস্কারের অভাবে রাস্তার সিংহভাগ অংশেই তৈরি হয়েছে প্রমাণ সাইজের গর্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শীত-গ্রীষ্ম তবু কোনও রকমে চলে যায়। কিন্তু বর্ষার জল-কাদায় ওই রাস্তার অস্তিত্বই বোঝাই দায় হয়ে পড়ে।

মার্কেট কমিটির এক কর্তাও সে কথা স্বীকার করে বলেন, “প্রতিদিন কয়েকশো চাষি খেতের ফসল নিয়ে কৃষক বাজারে আসেন। ওঁদের সুবিধার কথা ভেবেই আমরা রাস্তাটা বানিয়েছিলাম। কিন্তু সংস্কারের অভাবে এখন চাষীদের দুর্ভোগের সীমা নেই।”

কিন্তু রাস্তা সংস্কারের দায়িত্বটা ঠিক কার? বেহাল রাস্তার সংস্কারের দাবিতে স্থানীয় লোকজন একাধিকবার মার্কেট কমিটির শরনাপন্ন হয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কমিটির এক সহকারি বাস্তুকার বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের কিছুটা আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। ফলে আমাদের পক্ষে রাস্তা সংস্কার করা সম্ভব নয়। তাছাড়া, তৈরি রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের তেমন কোনও দায়বদ্ধতাও নেই।” তবে আশ্বাস দিয়েছেন নাকাশিপাড়ার বিধায়ক তৃণমূলের কল্লোল খান। তাঁর বক্তব্য, “ওই রাস্তা সংস্কারের বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট কৃষি বিপণন দফতরে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত ওই রাস্তা সংস্কার করা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement