প্রচারের ফাঁকে ধুবুলিয়ায় চায়ের দোকানে জলুবাবু। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
কৃষ্ণনগরের ‘পদ্ম-পথে’ কাঁটা বিছিয়েছে শাসক দল তৃণমূল নয়, বামফ্রন্ট। এমনই মনে করছেন ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়। স্থানীয় মানুষের কাছে যিনি জলুবাবু।
বিভিন্ন প্রাক-নির্বাচনী সমীক্ষা দেশজুড়ে মোদী-ঝড়ের আভাস দিলেও এ রাজ্যে বিজেপি-র সম্ভাবনা কতটা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। জলুবাবু অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছেন, নদিয়ার ওই কেন্দ্র থেকে তিনিই সেরা বাজি। শুধু তাই নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে শাসক দলের প্রার্থীকে ধর্তব্যের মধ্যেও আনছেন না তিনি। প্রতিপক্ষ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বামফ্রন্টের প্রার্থীকে। বৃহস্পতিবার ধুবুলিয়ার এক কর্মিসভায় তিনি বলেন, “লড়াইটা হবে বিজেপি’র সঙ্গে সিপিএমের। তাপস পাল বা তৃণমূল কোনও প্রতিপক্ষই নয়।”
রাজ্যের অধিকাংশ কেন্দ্রেই শাসক দলের প্রার্থীকে প্রধান প্রার্থী হিসেবে দেখছেন রাজনীতির কারবারিরা। জলুবাবুর এ দিনের মন্তব্যকে তাই ‘ঔদ্ধত্য’ বলেই দেখছে তৃণমূল। এ দিন টেলিফোনে তাঁর পাল্টা প্রতিক্রিয়াও জানিয়ে দিয়েছেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তাপস পাল। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “উনি রাজনীতি ভুলে গিয়েছেন। নয়তো এই রকম কথা বলেন?” তাপসের দাবি, “এখন একটাই হাওয়া, তৃণমূল। ভোটের ময়দানে বুঝিয়ে দেব তাপস পাল কে!”
গত লোকসভা নির্বাচনে অভিনেতা তাপসের কাছেই হেরে গিয়েছিলেন জলুবাবু। তারপরেই ঘোষণা করেছিলেন, রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর। দিন কয়েক আগে তাঁকে দলীয় নেতৃত্ব তাঁকে ফের প্রার্থী করার পরে জলুবাবুর যুক্তি ছিলহেরে গিয়ে অনুতাপ থেকে এমন কথা বলে ফেলেছিলেন তিনি। তবে এখন অবশ্য শাসকদল তথা তার প্রার্থীকে প্রায় ফুৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি।
তবে, নিছকই মুখের কথা নয়, গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও পঞ্চায়েত ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, ওই কেন্দ্রে সিপিএম কিঞ্চিৎ এগিয়ে রয়েছে। সাতটি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে পাঁচটিই তাদের দখলে। ২০০৯-এর লোকসভা নিবার্চনে তাপস পাল তাঁকে পরাজিত করেছিলেন।
গত বারের কথা নিজেই টেনে জলুবাবু বলেন, “সে বার পরিবর্তনের হাওয়ায় ভোটটা এক দিকে চলে গিয়েছিল। এ বার তা হবে না। এখানে যখনই ভোট হয়েছে সিপিএমের সঙ্গেই হয়েছে। এ বারও তাই হবে।”
তবে ব্যক্তিগত ভাবে তাপস প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। বিজেপি প্রার্থী বলেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে কারও নিন্দা করব না। গত পাঁচ বছরে কতখানি কাজ হয়েছে, মানুষ তা দেখেই ভোট দেবেন।”
বিজেপি সূত্রে খবর, প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার পরেই কৃষ্ণনগরে ঘাঁটি গেড়েছেন জলুবাবু। শহরে একটি ঘর ভাড়া নিলেও থাকছেন কালীগঞ্জের পাগলাচণ্ডীতে দেশের বাড়িতে। এর আগে কয়েকটা কর্মিসভা করলেও এ দিনই ধুবুলিয়া থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচার শুরু করেন তিনি।