ধুলিয়ানের ফেরিঘাট পেরোনোর সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ল এক জাল নোটের কারবারি। ধৃতের নাম মিলন শেখ। বাড়ি বহরমপুরের দৌলতাবাদে। শনিবার মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার পারদেওনাপুর থেকে ৩ লক্ষ টাকার জাল নোট নিয়ে নৌকোয় ধুলিয়ান ফেরিঘাট পার হয়ে ডাকবাংলো হয়ে বহরমপুর যাওয়ার চেষ্টা করছিল সে। সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ ফেরিঘাটে তাকে আটক করে। তল্লাশি চালিয়ে তার থেকে উদ্ধার হয় ২০০টি ৫০০ টাকার ও ২০০টি ১০০০ টাকার জাল নোট। এ দিকে একই জায়গায় বারবার জাল নোট কারবারিদের ধরা পড়ার ঘটনায় কপালে চওড়া ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের।
গত দু’মাসের মধ্যে এই ফেরিঘাটেই ২০ লক্ষ টাকার জাল নোট ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে। গ্রেফতার হয়েছে ১১ জন, যাদের প্রত্যেকেরই বয়স ২৫ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে এক তরুণীও রয়েছে। সোমবারও ধুলিয়ান ফেরিঘাটেই ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার জাল নোট সহ ধরা পড়ে রাজকুমার শেখ নামে এক যুবক। পারদেওনাপুর থেকেই জাল নোট নিয়ে ধুলিয়ানে ঢোকার পথে ধরা পড়ে সে। ১২ সেপ্টেম্বর রাতে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান ও রঘুনাথগঞ্জে দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করে। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় ৫ জনকে। একই রাতে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া পারদেওনাপুর থেকে তিন ব্যক্তি গঙ্গা পেরিয়ে ধুলিয়ান ফেরিঘাটে নামে। তাদের আটকে উদ্ধার করা হয় ৩ লক্ষ টাকার জাল নোট। পুলিশ জানায়, ধুলিয়ান স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরে কলকাতা ও সেখান থেকে দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল তাদের। এ দিনই গভীর রাতে রঘুনাথগঞ্জ শহর পেরিয়ে যাওয়ার পথে জেলা পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী দুই-যাত্রীসহ একটি মোটর বাইক আটক করে। দুই যাত্রী বাবর আলি ও আব্দুল খালেককে তল্লাশি করে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়। গত ১৪ অগস্ট এই পথ দিয়ে ধুলিয়ান ফেরিঘাট পেরোনোর সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল বহরমপুরের এক তরুণী-সহ ৩ যুবক। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ১২ লক্ষ টাকার জাল নোট।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “গত দু’বছরে জেলা পুলিশের হাতে ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকার জাল নোট ধরা পড়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত ২০০ জনকে। ধৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর এলাকার বাসিন্দা। লালবাগ বা বহরমপুর এলাকার কিছু তরুণকেও এখন জাল নোটের পাচারে নামিয়ে একটি বিকল্প পথ তৈরি করতে চাইছে নোটের কারবারিরা।” ”
পুলিশ জানিয়েছে, জাল নোটের কারবারের মূল ঘাঁটি পারদেওনাপুর। সীমান্ত পেরিয়ে জাল এসে জমা হয় ওই গ্রামে। পরে তা ছড়িয়ে পরে মহব্বতপুর, চরঅনন্তপুর, শোভাপুর, হাজিনগর-সহ আশপাশের গ্রামে। সেখান থেকে ধুলিয়ানের জলপথকে ব্যবহার করে তা বিভিন্ন পথ ধরে ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। পয়সার লোভে এখন উঠতি মেয়েরাও এই কারবারের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ছে। কারণ সাধারণভাবে মেয়েদের কেউ সন্দেহের চোখে দেখে না। সহজে পুলিশও তাদের তল্লাশি করে না। তারই সুযোগ নিচ্ছে মেয়েরা।