—প্রতীকী ছবি
সমবায় সমিতির ‘পার্বণ’ অনুষ্ঠান বাড়িতে জেলা তৃণমূলের নয়া কোর কমিটির ছয় নেতার রুদ্ধদ্ধার দ্বিতীয় বৈঠকেও পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ঘোষণা হল না। তবে বৈঠকে উপস্থিত রাজ্য সহ-সভাপতি মইনুল হাসান ও নয়া কমিটির আহ্বায়ক খলিলুর রহমানের সামনেই জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, “আজ মঙ্গলবার অথবা বুধবার এই কমিটি ঘোষণা হবে।”
একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ করে দলের জেলা নেতাদের সঙ্গে কলকাতায় সম্প্রতি বৈঠক হয়েছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর গড়ে দেওয়া ছয় নেতার কোর কমিটিকে দলনেত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন সাত দিনের মধ্যে সেই কমিটি ঘোষণা করে দেওয়ার। এমনকি নির্দেশ ছিল কলকাতার বৈঠক শেষে জেলায় ফিরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোর কমিটির বৈঠকে বসবারও। তার বদলে জেলা নেতাদের পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতেই ‘দিদি’র সঙ্গে বৈঠকের ১২০ ঘন্টা পরে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ছয় নেতা জেলা কার্যালয়ে প্রথম বৈঠক করেছিলেন। সেদিনও কমিটি প্রস্তুতির সুর শোনা গিয়েছিল নেতাদের মুখে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, আবু তাহের খান জেলা সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর দেড় বছর কেটে গেলেও এখনও নতুন জেলা কমিটি রাজ্যের অনুমোদন পায়নি। দলের পর্যবেক্ষক পদ বিলুপ্তির পর চেয়ারম্যান ও জেলা সভাপতির সঙ্গে চারজন কো-অর্ডিনেটর জুড়ে ছ’জনের একটি দল গঠন করে দিয়েছিল তৃণমূল ভবন। তাঁদের হাতেই ন্যস্ত ছিল নয়া জেলা কমিটি তৈরির দায়িত্ব। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে নিজেদের পছন্দের নেতাদের সেই কমিটিতে জায়গা করে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন নেতারা। যার ফলে বারবার বদলে যাচ্ছিল খসড়া তালিকা। আর ততই গোষ্ঠী কোন্দল মাথা চাড়া দিচ্ছিল বলে দলের একাংশ নেতা কর্মীর দাবি।
জেলা জুড়ে একই জায়গায় একই দলের ভিন্ন ভিন্ন নেতা নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে জনসভায় মেতে ওঠেন বলে দাবি করেন ওই নেতারা। পাশাপাশি ওই নেতাদের দাবি ‘‘সেই কোন্দল সামাল দিতেও হিমসিম খাচ্ছিলেন চেয়ারম্যান, কো-অর্ডিনেটরদের
সেই কমিটি।’’
যা নিয়ে অস্বস্তি গোপন ছিল না রাজ্য নেতাদেরও। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের নয়া জেলা কমিটি ঘোষণা। পুরনো কমিটির নেতারাই এতদিন দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন।
ইতিমধ্যে শুভেন্দু অধিকারীর দল বদলে রাজ্য রাজনীতিতে নয়া সমীকরণ তৈরি হয়। মুর্শিদাবাদ জেলাতেও তার আঁচ পড়ে। প্রকাশ্যে না বললেও তল্পিতল্পা গুটিয়ে দল বদলের প্রস্তুতিও শুরু হয় জেলা নেতাদের একাংশের মধ্যে।
তৃণমূলের এক জেলা নেতার দাবি, “সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই জেলার শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ একাংশ নেতা পদ্ম পাতায় ভরসা পাচ্ছেন না বলেই দলের উপর পরোক্ষে চাপ সৃষ্টি করছেন নিজেদের পদ ধরে রাখতে।” আর দল সেই সমস্ত নেতাদের বাছতে গিয়েই বিপদে পড়েছে বলে দাবি ওই নেতার। তিনি বলেন, “দল তাঁদের না পারছে ছাঁটতে না পারছে ধরে রাখতে। ওরা কাঁটার মত আটকে আছে দলের গলায়।”
পাশাপাশি দলীয় বিধায়কদের এলাকায় নিজেদের পছন্দ মত নেতা দেওয়ার জন্য নয়া কোর কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই কারণেও খসড়া তালিকায় নামের সংযোজন ও বিয়োজন এখনও অব্যাহত বলে দলের অন্দরের খবর। যদিও সেই কমিটিতে পুরোনো কমিটির নেতাদেরই প্রাধান্য থাকবে বলে সূত্রের খবর।