ফড়ে না এজেন্ট, ধন্দে সীমান্ত

বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ জানিয়েছেন, ওই ভারতীয়রা সকলেই অবৈধ ভাবে ইরাকে গিয়েছিলেন। তাঁদের সম্পর্কে কোনও তথ্যই ছিল না ভারতীয় দূতাবাসের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩৩
Share:

ইরাকে নিহত নদিয়ার দুই বাসিন্দা খোকন সিকদার এবং সমর টিকাদার। ফাইল চিত্র।

‘এজেন্ট’ দিয়ে যায় চেনা! এজেন্ট ভাল হলে যাত্রা শুভ। না হলে বিদেশের মাটিতে পদে পদে বিপদ।

Advertisement

সম্প্রতি ইরাকের মসুলে জঙ্গিদের হাতে নিহত সমর টিকাদার ও খোকন সিকদার-সহ ৩৯ জন ভারতীয়ের দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁরাও বৈধ ভাবে সেখানে যাননি বলেই জানা যাচ্ছে।

বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ জানিয়েছেন, ওই ভারতীয়রা সকলেই অবৈধ ভাবে ইরাকে গিয়েছিলেন। তাঁদের সম্পর্কে কোনও তথ্যই ছিল না ভারতীয় দূতাবাসের কাছে। তাঁরা ইরাকে যান অবৈধ এজেন্টদের মাধ্যমে। তার ফলে কারা কারা ইরাকে গিয়েছিলেন, ইরাকের কোথায় গিয়েছিলেন, তার খোঁজখবর পেতে অনেকটাই সময় চলে গিয়েছে।

Advertisement

সীমান্তের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এত টাকা খরচ করে, কষ্ট করে বিদেশ যাওয়া তো শুধু দু’টো পয়সা আয়ের জন্য। বিদেশ সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণা নেই। ফলে এজেন্টদের উপরে বিশ্বাস করেই তাঁরা সবটা করেন। কিন্তু সেই বিশ্বাসই কখনও কখনও কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তা হলে উপায় কী?

প্রায় ১৮ বছর ধরে বিভিন্ন দেশের নানা কোম্পানিতে শ্রমিক পাঠানোর কাজ করছেন বগুলার সমর বিশ্বাস। তিনি বলছেন, “দেশে কিছু হলে সেটা সহজেই সামলানো যায়। কিন্তু বিদেশে ঝক্কি অনেক। ফলে, স্রেফ বিশ্বাসে কিছু হয় না। বহু বিষয় খোঁজ খবর করে তবেই বিদেশে পা বাড়ানো উচিত।’’ সমরের দাবি, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে এই কাজ করে আসছি। বিভিন্ন দেশের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।” তিনি জানাচ্ছেন, শ্রমিকেরা যে দেশে কাজে যাচ্ছেন, সেখানকার কোম্পানির লোকজন এ দেশে এসে ‘ইন্টারভিউ’ নিয়ে তবেই লোক নিয়ে যায়। খুব কম সংখ্যক এজেন্ট এটার আয়োজন করে।

তাঁর অভিযোগ, এ পেশাতেও এখন ফড়ে ঢুকে গিয়েছে। তাঁরা নিজেদের এজেন্ট বলে দাবি করেন। বিস্তর টাকাপয়সাও নেন। এ দিকে, শ্রমিকদের কোনও ইন্টারভিউ দিতে হয় না। কোম্পানির লোকও আসে না। ফলে সহজে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে অনেকেই ওঁদের ফাঁদে পা দেন। তাঁরাই প্রতারিত হয়।

মুর্শিদাবাদের আতর আলি মোল্লা বলছেন, ‘‘এ ভাবেই তো সৌদি আরবে গিয়ে বিপদে পড়েছিলাম। স্রেফ বরাত জোরে সেখান থেকে দেশে ফিরেছি মশাই।’’ এক কাজের নাম করে নিয়ে গিয়ে অন্য কাজ দেওয়া, ভিসাতে গন্ডগোল, দিনের পর দিনে অপেক্ষা করেও কাজ না পাওয়া— অভিযোগের তালিকা বেশ লম্বা। (চলবে)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement