মহার্ঘ: আলু বিক্রি হরিহরপাড়ার বাজারে। নিজস্ব চিত্র
দিন পনেরো আগেও মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন বাজারে সাধারণ আলুর দাম ছিল ১৫ টাকা প্রতি কেজি। তাতে স্বস্তি ফিরেছিল ক্রেতাকুলের। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই সেই আলুর দাম কেজিতে দাঁড়ায় ২০ টাকা। তারপর থেকে প্রতিদিনই বাড়ছে দাম। গত তিন-চার দিন ধরে সাধারণ আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়।
রবিবারের পর সোম ও মঙ্গলবার বহরমপুরের নতুনবাজার, স্বর্ণময়ী বাজারে সাধারণ আলু (বিক্রেতারা এই আলুকে হাইব্রিড আলুও বলছেন) বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা প্রতি কেজি। জ্যোতি আলুর দাম ৩০ টাকা, চন্দ্রমুখী আলু ৩৫-৪০ টাকা কেজি। হরিহরপাড়া, নওদা, বেলডাঙা, ডোমকল সর্বত্র সাধারণ আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। বিক্রেতাদের বক্তব্য, গত প্রায় পাঁচ দিনে আলুর দাম বেড়েছে পঞ্চাশ কেজিতে ৩০০-৩৫০ টাকা। হরিহরপাড়ার আনাজ বিক্রেতা সোনারুদ্দিন খান বলেন, ‘‘বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে। তাই বাড়তি দাম নিচ্ছি। তাতেও বিশেষ লাভ হচ্ছে না।’’ আলুর এক আড়তদার জানান, ১৫ দিন আগে ৫০ কেজি আলুর দাম ছিল ৬০০-৬৫০ টাকা। এখন তা ৯৫০ টাকা। অর্থাৎ, বিক্রেতারা প্রতি কেজি আলু কিনছেন ১৮-১৯ টাকায়।
কিন্তু কেন হঠাৎ এই দামবৃদ্ধি। আলুর কারবারিদের একাংশের দাবি, ‘‘জেলার হিমঘরগুলি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া, এখনও পর্যন্ত হিমঘরে আলুর দাম নির্ধারিত হয়নি। বর্ধমান, বীরভূমের বেশ কিছু হিমঘর থেকে জেলার বিভিন্ন বাজারে আলু আসছে। মালদহ, হুগলি, বর্ধমানের চাষির ঘর থেকে কিংবা মহাজনের ঘর থেকে আলু আসছে। তাই আলুর দাম হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে।’’
এ দিকে, আলু বিক্রি নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগও উঠছে। জেলা কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় আটটি হিমঘরে আলু রাখা হয়। এপ্রিল মাসের গোড়া থেকে সেগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে অধিকাংশ হিমঘর খুলবে। তখন আলুর দাম কিছুটা হলেও কমতে পারে বলে মনে করছে কৃষি বিপণন দফতর। বহরমপুর মহকুমার কৃষি বিপণন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলার দু’-একটি হিমঘর থেকে আলু বেরোচ্ছে। তবে অধিকাংশ আলু আসছে অন্য জেলা থেকে। তাই কিছুদিন ধরে আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী।’’ অসাধু ব্যবসায়ীদের কালোবাজারি রুখতে বিভিন্ন হাটে-বাজারে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে মাঝেমধ্যে অভিযান চলছে বলেও দাবি তাঁর।