সমরের পদ্ম-যোগে ভোট বেড়েছে কই?

প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় বিজেপির কী লাভ হল?

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক

শিকারপুর  শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৫০
Share:

সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

গত লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় আগের ভোট ধরে রেখেছে বিজেপি। কিন্তু সীমান্ত ঘেঁষা সেই শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় সাতশো ভোট বাড়িয়েছে তৃণমূল। প্রত্যাশিত ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় বিজেপির কী লাভ হল?

Advertisement

বিজেপির সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষির জেরে মাস তিনেক আগে সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন সমর ঘোষ। যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। তবে উপ-নির্বাচনে তার বিশেষ প্রভাব পড়েনি বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই।

শিকারপুরে পদ্মের মাথাচাড়া দেওয়া হালের ঘটনা নয়। প্রায় পঁচিশ বছর আগে থেকেই এখানে বিজেপির প্রভাব টের পাওয়া গিয়েছে। ১৯৯৮, ২০০৮, ২০১৩ ও ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি ভাল ফল করেছে। কখনও একা, কখনও জোট বেঁধে ক্ষমতাও দখল করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের মতেই, সমর ঘোষ যোগ দেওয়ায় বিজেপির লাভ বা লোকসান কোনওটাই হয়নি।

Advertisement

স্থানীয় বিজেপি নেতা জীবানন্দ সাহা জানান, গত লোকসভা ভোটের সময়ে সমরেন্দ্রনাথ সিপিএমে ছিলেন। সে বার এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ২৩টি বুথে বিজেপি ৮৭৫৫ ভোট পেয়েছিল। তৃণমূল পায় ৬০৬১টি। এ বার বিজেপি ৮৮০১ ভোট পেয়েছে, তৃণমূলের ভোট বেড়ে হয়েছে ৬৭৭৯। ভোটের যে বিশেষ বাড়বৃদ্ধি হয়নি, তা কার্যত পরিষ্কার।

গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে সমরের নিজের ২১৫ নম্বর বুথে বিজেপির ৪২০টি ভোট পেয়েছিল, মে মাসে লোকসভা ভোটে পায় ৪৪০টি ভোট। এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৪৮৪। ওই তিন নির্বাচনে সিপিএম পেয়েছে যথাক্রমে ১৫৫, ১৪৯, ৭২ ভোট। অর্থাৎ ওই বুথের কিছু সিপিএম কর্মী-সমর্থক সমর ঘোষের জন্য বিজেপিকে ভোট দিয়ে থাকতে পারেন। তবে তা নিতান্তই সামান্য।

সমরেন্দ্রনাথের দাবি, “সিপিএমের ঔদ্ধত্যের কারণেই আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। কারণ মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে একটা দল লাগে।’’ উপ-নির্বাচনের প্রচার-পর্বে সমরকে বিজেপির বহু সভাতেই মঞ্চে হাজির থাকতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু নিজের এলাকাতেই তিনি ভোটে দাগ কাটতে পারলেন না? সমরের দাবি, “সিপিএম ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। একটা দাগ রয়ে গিয়েছে। এ বার যতটা সম্ভব সংগঠনের কাজ করেছি। আগামী দিনে বুথ স্তরে কাজ করব।”

বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জে‌লা সভাপতি মহাদেব ঘোষ বলেন, ‘‘সমরবাবু শিক্ষক, শিক্ষিত মানুষ। আমাদের দলে আসতে চেয়েছিলেন, তাই আমরা তাঁকে গ্রহণ করেছি। এই ভোটে তিনি খাটাখাটনিও করেছেন। এর সঙ্গে ভোট বাড়া বা না-বাড়ার কোনও সম্পর্ক নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement