উঠে গিয়েছে রাস্তার পিচ। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র
শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড, অথচ রাস্তায় পিচ পড়েনি। মোরামের পথ। তা নিয়ে নিজের ক্ষোভ লুকোলেন না বিজয় দাস। খেদের সুরে বলে উঠলেন, “রাজ্যের কোথাও দেখেছেন পুরসভার রাস্তা মোরামের? হঠাৎ কেউ এলে বুঝতেই পারবেন না, আমরা শহরে বাস করি। কত বার দরবার করা হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। একটু বৃষ্টি হলে রাস্তায় আর পা রাখা যায় না। কবে এই দুর্ভোগ দূর হবে, জানি না।”
দু’বেলা পানীয় জল, নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই, পাকা নর্দমা নিয়ে অভিযোগ তো ছিলই। পুরবাসীর নালিশ শহরের রাস্তা নিয়েও। অভিযোগ, কোথাও রাস্তা এখনও পাকা হয়নি। কোথাও রাস্তা পাকা হলেও পিচ উঠে গিয়েছে। খানা খন্দে ভরা। জেলার রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, রাস্তা নিয়ে চাকদহের মানুষের অভিযোগ বিস্তর। যা বিরোধীদের পালে হাওয়া জোগাতে পারে।
১ নম্বর ওয়ার্ডে ভবানীপুর এলাকায় রাস্তা এখনও মোরামের রাস্তা। পালপাড়া রেলগেট থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দিকে যেতে পড়ে ভবানীপুর চার মাথার মোড়। এই মোড়ে ডান দিকে রয়েছে মোরামের রাস্তা। ওই ওয়ার্ডেই পালপাড়া রেলগেট ছাড়িয়ে ডান দিকে একটি রাস্তা এক সময় পাকা ছিল। এখন সেখানে পিচ বলে কিছু নেই। শহরের পশ্চিম দিকে থানার সামনে দিয়ে একটি পাকা রাস্তা রানিনগরের দিকে চলে গিয়েছে। সেই রাস্তায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউতলা মোড় থেকে ডান দিকে পাকা রাস্তা চলে গিয়েছে। সেই রাস্তাটির হালও বেশ খারাপ। সেখানেও পিচ বলে কিছু নেই। রানিনগর যাওয়ার প্রধান রাস্তা ধরে খানিকটা এগিয়ে গেলে সাধনপল্লির মোড় থেকে পাকা রাস্তা ডান দিকে চলে গিয়েছে। খানিকটা এগোলে সেটিরও বেহাল অবস্থা চোখে পড়ে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপাড়ার রাস্তাটির অবস্থাও তথৈবচ। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নরেন্দ্রপল্লিতে পাকা রাস্তায় পিচ উঠে গিয়েছে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিধানসঙ্ঘ মোড় থেকে গোরপাড়া দিকে যেতে পাকা রাস্তার বেহাল অবস্থা। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোরপাড়া ১ নম্বর রামকৃষ্ণ কলোনির রাস্তাটির অবস্থাও বেহাল। সেখানে বেশ খানিকটা এলাকা জুড়ে পিচ উঠে গিয়েছে। কোথাও কোথাও বড় পাথর বেরিয়ে পড়েছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চাকদহ রেল স্টেশনের কাছে রেলগেটের ডান দিকে পাকা রাস্তা চলে গিয়েছে। পাকা রাস্তা শেষ হয়ে ঢালাই রাস্তা শুরু হয়েছে। এই পাকা রাস্তার অধিকাংশ এলাকায় পিচ উঠে গিয়েছে। বিধান সঙ্ঘ ক্লাবের পাশ দিয়ে সাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন বছর পরিমল পাত্র। সাইকেল থামিয়ে বলেন, “এই হচ্ছে আমাদের শহরের রাস্তার চেহারা। জায়গায় জায়গায় পিচ উঠে গিয়েছে।”
নরেন্দ্রপল্লির বাসিন্দা অমল মজুমদার বলেন, “লরি এই রাস্তা দিয়ে ইমারতি দ্রব্য নিয়ে যায়। ফলে, রাস্তার এই অবস্থা। আর খেসারত দিতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে।”
পুরসভা অবশ্য রাস্তা নিয়ে অভিযোগ মানতে চায়নি। কাউন্সিলরদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুর এলাকার বেশির ভাগ রাস্তাই পিচের। সেগুলির অবস্থাও বেশ ভাল। আর যে রাস্তাগুলির পিচ উঠে গিয়েছে, সেগুলি দ্রুত মেরামত করা হবে। শহরের রাস্তা দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তী নিজেই। এ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা বলে তাঁর থেকে যথাযথ উত্তর মেলেনি।