মায়ের সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষায় দশম স্থান পাওয়া তোষালি। কৃষ্ণনগরে শুক্রবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
স্বপ্নটা ডানা মেলে ওড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার জন্য একটু একটু করে লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছিল মেয়েটি। কারণ, বড় হয়ে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতে চায় তোষালি ঘোষ। বিজ্ঞান নিয়েই আগামী দিনে পড়তে চায় সে। অঙ্ক আর পদার্থবিদ্যা তার প্রিয় বিষয়।
৬৮৩ নম্বর পেয়ে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় দশম স্থান অধিকার করেছে তোষালি। কৃষ্ণনগরের হোলি ফ্যামিলি গার্লস হাইস্কুলের এই ছাত্রী বিশ্বাস করে, অল্প করে গোটা সিলেবাসই যদি খুঁটিয়ে পড়া যায়, তা হলেই পরীক্ষায় ভাল নম্বর পাওয়া সম্ভব।
তোষালি ছোট বেলা থেকেই স্কুলের পড়ার উপরে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। আট জন গৃহশিক্ষক থাকা সত্ত্বেও স্কুলের পড়াশোনার উপরে সে বেশি নির্ভরশীল। তোষালি জানিয়েছে, পড়াশোনা করতে তার ভাল লাগলেও পড়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় ছিল না। যখন তার পড়তে ভাল লাগত, বই নিয়ে বসে যেত। তবে পাঠ্যক্রমের বাইরেও সে গল্পের বই পড়তে ভালবাসে। সময় পেলেই গল্পের বই পড়ে। আর ভালবাসে তথ্যসমৃদ্ধ বই পড়তে। তার কথায়, “মাধ্যমিক মানেই যে সারা দিন বই নিয়ে বসে থাকতে হবে, তেমন নয়। মন দিয়ে পড়তে হবে। আর সারা দিন যেটা পড়া হয়েছে, সেটাই রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঝালিয়ে নিতে হবে।”
তোষালির বাবা সন্দীপকুমার ঘোষ এক জন স্কুলশিক্ষক। তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করতাম— ও পারবে। সেটাই হল। পড়াশোনার প্রতি ওর ভালবাসাই সাফল্যের প্রধান চাবিকাঠি।”
তোষালি বাংলায় পেয়েছে ৯৩, ইংরেজিতে ৯৬, অঙ্কে ১০০, পদার্থবিদ্যায় ১০০, জীববিদ্যায় ৯৯, ইতিহাসে ৯৫ ও ভূগোলে ১০০। তোষালি জানিয়েছে, ভাল নম্বর আশা করলেও এতটা ভাল সে আশা করেনি। পড়ুয়ার কথায়, “টিভিতে আমার নাম দেখাবে সেটা কোনও দিন ভাবিনি। বাবা-মা ভাল ফল করতে বলতেন। সেটাই চেষ্টা করেছি।”তবে কিশোরী জানাতে ভোলেনি—“শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি আমার বাবা-মা পাশে না থাকলে এমন নম্বর পাওয়া সম্ভব ছিল না।”