গৌরব মাঝি। নিজস্ব চিত্র
কঠিন রোগ তাকে হারাতে পারেনি। বরং রোগকে হারিয়ে জীবনের প্রথম পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে পাশ করেছে কল্যাণী ইউনিভার্সিটি এক্সপেরিমেন্টাল হাইস্কুলের ছাত্র গৌরব মাঝি।
শুক্রবার কলকাতার হাসপাতাল থেকে কেমোথেরাপি করিয়ে মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফেরার সময় গৌরব জানতে পারে, মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে সে।
গত দু’বছর ধরে ব্ল্যাড ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছে সে। চিকিৎসার শুরুর দিকে কখনও সাত দিন, কখনও পনেরো দিন, কখনও এক মাস পর-পর কেমো নিতে হত। এখন তিন মাস পর-পর নিতে হয়। গত বছর পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করেও শারীরিক অসুস্থতার জন্য পরীক্ষায় বসতে পারেনি। তবে এ বার গৌরবের জেদের কাছে হার মেনেছে অসুখ।
প্রায় আড়াই বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গৌরবের বাবা মারা গিয়েছেন। মা, বোন ও ঠাকুমাকে নিয়েই এখন গৌরবের সংসার। বাবা ছিলেন সরকারি কর্মচারী। বাবার মৃত্যুর পর সেই চাকরি পান মা মালা মাঝি। বাবার মতোই কমার্স নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছা গৌরবের।
তার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছন্দা বিশ্বাস বলেন, ‘‘সুস্থতার সঙ্গে লড়াই করেছে, পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। করোনার সময় কেমো চলাকালীন ওর শরীরের খুব খারাপ অবস্থা ছিল! তার মধ্যেও পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে।’’ গৌরবের মা মালা মাঝি-র কথায়, “বলতাম কোনওভাবে পরীক্ষায় পাশ করলেই হবে। কিন্তু ও ভাল ফলের স্বপ্নে বিভোর ছিল।’’ গৌরবের জেদ আর লড়াইকে স্কুলের শিক্ষক থেকে সহপাঠী— কুর্নিশ জানিয়েছে।