প্রতীকী ছবি
আজ, বুধবার মুর্শিদাবাদ জেলার সমস্ত বেসরকারি বাস না চালানোর সিদ্ধান্তে অনড় থাকল জেলার বাস মালিক সংগঠনগুলি। তবে বৃহস্পতিবার থেকে বাস টানা বন্ধ থাকবে কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সদস্য মুর্শিদাবাদ জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। তার জেলা সম্পাদক তপন অধিকারী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনেছি। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। রাজ্য স্তরে কথা না বলে কোন সিদ্ধান্ত জানতে পারছি না। তবে ততক্ষণ বাস পথে নামবে না।” এই সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে বেসরকারি বাস চলাচল করবে কি না, তা নির্ভর করছে সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব কী সিদ্ধান্ত নেন, তার উপরেই।
বুধবার সরকারি ছুটি হওয়ায় অফিস আদালত বন্ধ থাকবে। তাতে ভিড় অল্প কম থাকবে। তবে তাতেও সপ্তাহের মাঝখানে বাস বন্ধ হওয়ায়, অনেকেই পড়বেন দুর্ভোগে।
আজ যে বাস বন্ধ থাকবে, সে কথা মঙ্গলবার জেলা আঞ্চলিক পরিবহন আধিকারিককে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলা বাস ওনার্স কাউন্সিল। এই দিন সেই লিখিত অভিযোগে পেট্রল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি তাঁরা জেলার বিভিন্ন রুটে বেআইনি গাড়ি চলাচলের জন্যও তাদের দৈনিক লোকসানের বহর বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন। জেলা আঞ্চলিক পরিবহন আধিকারিক সিদ্ধার্থ রায় বলেন, “মালিকপক্ষ যদি নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দেন কোন কোন রুটে বেআইনি গাড়ি চলাচলের জন্য তাঁদের স্বার্থ সংঘাত হচ্ছে তাহলে আমরা সেই মতো ওই গাড়িগুলির বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
লকডাউনের ফলে এমনিতেই দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল জেলার বাস পরিবহণ ব্যবস্থা। মে মাসের শেষের দিকে লকডাউন কিছুটা শিথিল হতেই জুন মাসের পয়লা পথে নামে সরকারি বাসের সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারি বাসও। জুন মাসের শেষের দিকে আস্তে আস্তে ছন্দে ফিরছিল বাস চলাচল। বাস মালিক সংগঠনের হিসাব অনুযায়ী ওই মাসের প্রথম দিকে একশো থেকে দেড়শো গাড়ি চলাচল করলেও শেষের দিকে সংখ্যাটা বেড়ে আড়াইশো থেকে তিনশোতে দাঁড়িয়েছিল। সংখ্যায় অল্প হলেও দূরপাল্লার বাসও চলাচল করছিল। ধীরে ধীরে বাড়ছিল যাত্রী সংখ্যাও। এই অবস্থায় কেন এমন সিদ্ধান্ত?
বাস মালিকদের দাবি, সরকারি নির্দেশ মেনে লোকসান সত্ত্বেও বাস রাস্তায় নামিয়ে ছিলেন তাঁরা। তপনবাবু বলেন, “ডিজেল পেট্রলের লাগাম ছাড়া দামবৃদ্ধির ফলে লোকসানের পরিমাণ আকাশ ছুঁয়েছে। এরপরে বাস চালালে না খেতে পেয়ে মরতে হবে অনেক বাস মালিককে।”
তবে জেলার মানুষের বক্তব্য, বাস মালিকেরা যে সব অজুহাত দিচ্ছেন, তা এক দিনের সমস্যা নয়। তার মধ্যেই এত দিন তাঁরা লাভ করছিলেন, এখন তাঁরা চাপ দিয়ে ভাড়া বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। তবে অনেকের আশা, আজ, বুধবার সরকারি বাস রাস্তায় বেশি নামবে।