Mid Day Meal

মিড-ডে মিলে মুড়ি ও সাবান, বিতর্কে শিক্ষকেরা

ধর্মদা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষকরা মিলে ঠিক করছিলেন যে পড়ুয়াদের চাল, আলুর সঙ্গে ৫০০ গ্রাম করে মুসুর ডাল দেবেন।

Advertisement

সন্দীপ পাল

কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলার বিভিন্ন স্কুলে সোমবার থেকে দ্বিতীয় দফায় মিড-ডে মিলের চাল, আলু দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে সেই চাল, আলুর সঙ্গে নাকাশিপাড়ার কাঁচকুলি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা নিজের খরচে প্রত্যেক অভিভাবককে এক প্যাকেট মুড়ি, এক প্যাকেট সয়াবিন, এক প্যাকেট লবণ এবং একটি সাবান দিয়েছেন। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ব্যাপারে আপত্তি তুলেছেন অন্য স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, এতে ওই ব্লকের অন্য স্কুলের শিক্ষকদের সম্পর্কে অভিভাবকদের মনে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে। তাঁদের মনে হতে পারে, ওই সব স্কুলে কম জিনিস দেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে, নাকাশিপাড়ার ধর্মদা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাল, আলুর সঙ্গে ডাল দেবেন বলে ঠিক করলেও এসআই অফিস থেকে বারণ করায় তাঁরা পিছিয়ে আসেন।

প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের মতে, লকডাউনের সময় কোনও স্কুলের শিক্ষকরা সাহায্য করতে চাইলে তা মিড-ডে মিল বিতরণের নির্দিষ্ট দিনে না করাই ভাল। কারণ এতে অভিভাবকদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। যার জেরে অশান্তি হওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে। এক শিক্ষক অনুপ মণ্ডল বলেন, ‘‘এখানে মানুষ সব সময় এত বুঝতে চান না। ইতিমধ্যে অনেক অভিভাবক আমাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, আমরা কেন দিচ্ছি না। এই ঘটনা ঘটতে পারে জেনেই আগাম প্রশাসনকে এই বিষয়ে আমরা অবগত করেছি। এই সময় বিষয়টি সংবেদনশীল।’’

Advertisement

যদিও এতে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনও কারণ নেই বলেই মনে করছেন কাঁচকুলি প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর বর্মন। তাঁর কথায়, ‘‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনও কারণ নেই। সকল শিক্ষকরা মিলে ঠিক করেছিলাম, এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াব। তাই যাদের নিয়ে আমরা সারা বছর কাটাই তাদের বেছে নিয়েছিলাম। এটা নিয়ে সমালোচনার কথা শুনে খারাপই লাগছে। এ ছাড়াও সকলকে আমরা বলেই দিয়েছি, এই চাল, আলু বাদ দিয়ে সকল জিনিস শিক্ষকরা সকলে মিলে দিচ্ছে।’’

ধর্মদা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষকরা মিলে ঠিক করছিলেন যে পড়ুয়াদের চাল, আলুর সঙ্গে ৫০০ গ্রাম করে মুসুর ডাল দেবেন। সেই মতো তাঁরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু রবিবার এসআই অফিস থেকে ফোন করে তাঁদের তা করতে বারণ করা হয়। একই ব্লকে অন্য একটি স্কুলে অতিরিক্ত জিনিস দেওয়া গেলেও তাঁদের স্কুলকে কেন বারণ করা হল, সেই প্রশ্নই তুলেছেন ধর্মদা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।

ধর্মদা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীবাস দাস বলেন, ‘‘আমার সমস্ত ব্যবস্থা করাই ছিল। পাশের গ্রামের একটি স্কুলে অতিরিক্ত জিনিস দেওয়া হল শুনে খারাপ লাগছে। আমরা উদ্যোগী হয়েও পারলাম না। তবে আগামী দিনে কিছু করার চেষ্টা করব।’’ ওই সার্কেলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌগত বিশ্বাসকে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে জানতে চাইলে আমরা বলে থাকি, স্থানীয় আধিকারিকদের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে করতে। তাতে কাজ করতে সুবিধা হয় বলেই মনে হয় আমার।’’

অন্য দিকে, প্রথম দফায় ভিড় দেখা গেলেও দ্বিতীয় দফায় চাল আলু দেওয়ার সময় সে রকম ভিড় চোখে পড়েনি। সকলে হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে স্কুলে প্রবেশ করছিলেন। শিক্ষকদের একাংশের মতে, শ্রেণি ভাগ করার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement