ছবি এএফপি।
লক ডাউনের জেরে দাম বেড়েছে চাল, ডাল সহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর। তা ছাড়া, চাহিদা মতো সাবান, শ্যাম্পু, জীবাণুনাশক স্যানিটাইজ়ারও মিলছে না। শিশুদের খাবার অর্থাৎ বেবি ফুডও অমিল হরিহরপাড়া, নওদার বিভিন্ন বাজারে।
দিন কয়েক আগেও হরিহরপাড়া, নওদার বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ চাল ২৫ কেজির চালের প্যাকেট বিক্রি হত ৬২০-৬৩০ টাকায়। ২৫ কেজি মিনিকিট চাল বিক্রি হচ্ছিল ৯৫০ টাকায়। কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। সাধারণ মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৬০ টাকা প্যাকেট। আর মিনিকিট বিক্রি হচ্ছে এগারোশো টাকা প্যাকেট। শুধু চালই নয়, দাম বেড়েছে ডাল, সর্ষের তেল সহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীরও। প্রায় দুই সপ্তাহ আগেও মসুর ডাল বিক্রি হত ৮৫-৯০ টাকা কেজি দরে। এখন সেই মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা কেজি দরে। অন্য ডালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১৫-২০ টাকা। ৯০ টাকা লিটার সাধারণ সর্ষে তেলের দাম বেড়ে হয়েছে ১১০ টাকা লিটার। বিভিন্ন রকম মশলার দামও বেড়েই চলেছে।
মুদির দোকানদারেরা বলছেন, ‘‘পাইকারদের কাছ থেকেই চাহিদা মতো সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে না। যেগুলি পাওয়া যাচ্ছে তারও দাম অপেক্ষাকৃত বেশি।’’ সাহাবুল ইসলাম নামে হরিহরপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমার ছয় মাসের শিশুকে গরুর দুধই খাওয়াতে হচ্ছে।’’
চালের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বিক্রেতারা বলছেন লক ডাউনের জেরে জেলার অধিকাংশ চালকল বন্ধ রয়েছে। দু-একটি চালকল অল্প শ্রমিক দিয়ে চালু রাখলেও উৎপাদন হচ্ছে খুব কম। যদিও হরিহরপাড়া, নওদার মতো মফস্সল এলাকার চালের কারবারিরা বলছেন, অধিকাংশ চাল আসে বর্ধমানের একাধিক চালকল থেকে। বিক্রেতারা বলছেন চালকলগুলি দাম বেশি নেওয়ার ফলেই তাঁদেরও বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
আলাউদ্দিন শেখ নামে এক চাল বিক্রেতা বলেন, ‘‘সপ্তাহে গড়ে ১০০ প্যাকেট চাল বিক্রি হয়। প্রায় এক সপ্তাহ আগে মহাজনকে ১০০ প্যাকেট চালের জন্য আগাম টাকা দিয়েছি। কিন্তু চাহিদা মতো চাল পাচ্ছি না। আবার দামও প্যাকেট পিছু ১০০-১২০ টাকা বেশি।’’
হরিহরপাড়া বাসিন্দা সরিফুল ইসলাম, নামে এক ইটভাটা শ্রমিক বলেন, ‘‘সপ্তাহখানেক আগেও চালের দাম ছিল ৬৩০ টাকা প্যাকেট, আর সেই চাল এখন কিনতে হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। লক ডাউনের জেরে বন্ধ কাজ। আমরা খাব কী?’’
চালের দাম বৃদ্ধির খবর পৌঁচেছে প্রশাসনের কাছেও। হরিহরপাড়া ব্লকের বিডিও পূর্ণেন্দু সান্যাল বলেন, ‘‘কালোবাজারি রুখতে সবাইকেই সতর্ক করা হয়েছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযানও চলছে।’’