West Bengal Lockdown

ক্যামেরা বন্ধ, ক্যাশবাক্সও

বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বীরভূম জেলার ময়ূরেশ্বর থানার রামনগর বাজার। ওই বাজারে ছোট একটি ঘর ভাড়া নিয়ে স্টুডিয়োর ব্যবসা করেন বুদ্ধদেব।

Advertisement

কৌশিক সাহা

বড়ঞা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২০ ০০:৫২
Share:

ছবি: পিটিআই।

ছোট্ট একটা স্টুডিও রয়েছে। দিনভর পাসপোর্ট ছবি আর জেরক্স করে দিন গুজরান করেন বড়ঞা ব্লকের তালবোনা গ্রামের বুদ্ধদেব দাস। সেই উপার্জনে স্ত্রী, ছেলের পড়াশোনা ও বৃদ্ধ মায়ের দেখাশোনা করতে হয়। কিন্তু টানা লকডাউনের স্টুডিও ব্যবসায় তালা পড়েছে, ক্যাশবাক্সও বন্ধ।

Advertisement

বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বীরভূম জেলার ময়ূরেশ্বর থানার রামনগর বাজার। ওই বাজারে ছোট একটি ঘর ভাড়া নিয়ে স্টুডিয়োর ব্যবসা করেন বুদ্ধদেব। বাজারে সচল থাকলে দিনে শ’তিনেক টাকা উপার্জন হয় বলে জানান বুদ্ধদেব। সেখান থেকেই সংসার চালানো থেকে একমাত্র ছেলে সুদীপ্ত দাসের পড়াশোনার খরচ, বৃদ্ধ মায়ের ওষুধ সব কিছুর জোগান দেন তিনি। গ্রামের বাসিন্দা হওয়ার পরেও এককাঠা জমি নেই বুদ্ধদেবের। ফলে আনাজপাতি থেকে সংসারের সমস্ত কিছুই বাজার থেকে কিনে করতে হয়।

দিনে পাসপোর্ট ও জেরক্স করার পাশাপাশি বিয়ে, অন্নপ্রাশন-সহ নানা ধরনের অনুষ্ঠানের ছবি তোলার বরাত নিয়ে কাজ করেন। এই করোনাভাইরাসের কারণে সমস্ত ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান এখন বন্ধ। বৈশাখ মাসে বিয়েও বন্ধ।

Advertisement

তিল তিল করে যেটুকু টাকা গচ্ছিত করতে পেরেছিলেন এই ক’দিনের লকডাউনে সব শেষ হয়ে এসেছে। ১৪ এপ্রিল লকডাউন উঠবে ভেবে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছিলেন। ফের নতুন করে ৩ মে পর্যন্ত দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা হয়েছে। এ বার কী হবে সেটা নিয়েই চিন্তায় বুদ্ধদেব। বুদ্ধদেবের স্ত্রী শ্যামলী দাস বলেন, “সরকার রেশনে চাল, আটা বিনা পয়সায় দিচ্ছে, কিন্তু আমাদের যে কার্ড আছে তাতে বিনা পয়সায় কিছুই পাওয়া যায় না। সংসারে যেটুকু চাল আছে টেনেটুনে আর দিন পাঁচেক চলবে। তারপর কী হবে জানি না।”

করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন চলছে, ঘরে চাল কেন, সবই প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। কিন্তু জীবনের উপর থেকে ভরসা হারাননি বুদ্ধদেব। তিনি বলেন, “একটা দিন আসবে সব কিছু আগের মতো হয়ে যাবে। মানুষের জীবনটা সংগ্রামের জীবন। নদীতে সব সময় যেমন এক ভাবে জল বয়ে যায় না মানুষের জীবনেও তাই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement