ছবি: পিটিআই।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘ফ্রন্ট লাইনার’ বা প্রথম সারির যোদ্ধা যাঁরা সেই চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হেনস্থা করার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার নিজের কাজে বেরিয়ে হেনস্থা হতে হল চাকদহের এক পুরস্বাস্থ্যকর্মীকে।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে চাকদহ পুরসভার ২ এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝামাঝি শিতলাতলা এলাকায় প্রকাশ্য রাস্তায়। নমিতা তালুকদার সরকার নামে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর অভিযোগ, তাঁর মুখে সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে অপমানজনক কথা বলে অপরিচিত তিন যুবক। ওই স্বাস্থকর্মী বিষয়টি পুসভাকে জানান। পুরসভা তা জানায় পুলিশকে। ওই কর্মীর বাড়ি পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কেবিএম এলাকায়। কয়েক দিন আগে একটি বাড়িতে মানুষকে করোনার বিষয়ে সচেতন করতে গিয়ে আরও এক স্বাস্থকর্মীকে হেনস্থা হতে হয়েছিল বলে পুরসভা সূত্রের খবর। পুলিশ বিষয়টি জানার পর এলাকায় অভিযান চালায়। কিন্তু, সেই সময় সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। এলাকার নজর রাখা হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে পুর এলাকায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এঁরা প্রত্যেকেই মহিলা। করোনা-সংক্রমণের এই কঠিন সময়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা এবং বাড়ি-বাড়ি নজরদারির মতো কাজ এঁদের করতে হচ্ছে। তাতে সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকছে। এঁদের বেতনও সামান্য। তার মধ্যেও অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে এঁরা কাজ করছেন। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘এঁদের কাজকে কুর্নিশ করার পরিবর্তে কিছু বিবেকহীন মানুষ অন্যায় আচরণ করে স্বাস্থ্যকর্মীদের লড়াইকে অসম্মান করছেন।’’
বারো বছরের বেশি সময় ধরে চাকদহ পুরসভার স্বাস্থকর্মী হিসাবে কাজ করছেন নমিতাদেবী। এ দিন সকাল এগারোটা নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে সাইকেলে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাজে যাচ্ছিলেন। তিনি দেখেন, প্রকাশ্য রাস্তায় কোনও দূরত্ব বজায় না-রেখে এবং মুখে মাস্ক না পরে তিন জন যুবক ধূমপান করছে। অভিযোগ, নমিতাদেবীকে দেখে তারা তাঁর মুখ লক্ষ্য করে ধোঁয়া ছাড়ে। তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁকে হেনস্থা করা হয়।
ওই স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, “আমি রুখে দাঁড়ালে ওরা আমাকে হেনস্থা করে। এমনকি আমার গায়ে হাত দেওয়া হয়।” তাঁর আরও বক্তব্য,”ওদের এক জন বলে, ‘চাকদহে করোনা নেই।’ শুনে আমি সাইকেল থেকে নেমে পড়ি। ওদের বলি, করোনা হলে তার পর সচেতন হবে? এই নিয়ে বচসা বাধে। ওরা অপমানজনক কিছু শব্দ উচ্চারণ করে বলে, ‘খাবার দিচ্ছো না, আবার বড় বড় কথা বলছো!’ আমি ওদের বোঝানোর চেষ্টা করি, খাবার দেওয়া আমাদের কাজ নয়। আমাদের দায়িত্ব আলাদা। কিন্তু ওরা তাতে
কান দেয়নি।”