West Bengal Lockdown

ভাতা পেয়ে চোখে জল গীতা, পুটুিরয়ার

‘জয় বাংলা’ প্রকল্পে সাগরদিঘির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে এক হাজার টাকা বার্ধক্য ভাতা তুললেন গীতা ফুলমালী।

Advertisement

বিমান হাজরা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২০ ০৫:০৩
Share:

গীতা ফুলমালী। নিজস্ব চিত্র

লকডাউনে রুজিতে তালা পড়েছিল দুই ভিক্ষাজীবীর। নিরন্ন সেই দুই ভিক্ষাজীবীর জীবন যুদ্ধের কথা প্রকাশ পেয়েছিল সংবাদমাধ্যমে।

Advertisement

বুধবার রুজির সেই বন্ধ তালা খুলে দিল সাগরদিঘি ব্লক প্রশাসন। এ দিনই ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পে সাগরদিঘির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে এক হাজার টাকা বার্ধক্য ভাতা তুললেন গীতা ফুলমালী। ভাতা মঞ্জুর হয়ে ওই একই ব্যাঙ্কে ‘জয় জোহার’ প্রকল্পে এক হাজার টাকা জমা পড়েছে পুটুরিয়া কিস্কুর অ্যাকাউন্টেও। তিনি অবশ্য এ দিন ব্যাঙ্কে আসেননি। ব্লক অফিস থেকে অবশ্য এদিনই চন্দনবাটীতে তাঁর বাড়িতেও ভাতার টাকা আসার কথা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ।

লকডাউনের থাবায় থমকে যাওয়া ট্রেনের গতি যেন সংসার থেকেও নেই এমন দুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার জীবনেও টেনে এনেছিল বাঁচা মরার এক গভীর সঙ্কট।

Advertisement

এদের এক জন বছর ৬৫ বয়সের গীতা ফুলমালি, অন্য জন পুটুরিয়া কিস্কু। সাগরদিঘি স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের পাশে দু’জনকে পাশাপাশি বসে ভিক্ষে করতে দেখেছেন অনেকেই। বেশ কয়েক জোড়া ট্রেনের যাতায়াতের পথে পথ চলতি মানুষের দানে চলত তাঁদের দিনযাপন।

গীতাদেবীর স্বামী মারা গেছেন সেই কবে। একমাত্র ছেলে স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে থাকেন সাগরদিঘিতে। তাই নিঃসঙ্গ গীতাদেবীর ভরসা এই ভিক্ষাবৃত্তিই। পুটুরিয়া কিস্কুর এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। দু’জনেই বিয়ে করে সংসার পেতেছেন চন্দনবাটী গ্রামেই। কিন্তু বাবার স্থান হয়নি তাদের ঘরে। তাই পেট চালাতে স্টেশনকে বেছে নিয়েছেন কয়েক বছর থেকেই।

এ দিন হলদি গ্রামে তাঁর বাড়ি থেকে ষাটোর্ধ্ব গীতাদেবীকে ব্যাঙ্কে নিয়ে আসেন ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাতা পাবেন আজ ব্যাঙ্ক থেকে, তখনও যেন ঠিক বুঝে উঠতে পারেনি গীতাদেবী। পরনে আধময়লা কাপড়। ব্যাঙ্কে ঢুকে টিপছাপ দিতেই তা সনাক্ত করলেন ব্যাঙ্কেরই এক কর্মী। এক কর্মী বৃদ্ধার হাতে তুলে দিলেন ১০টি কড়কড়ে একশো টাকার নোট। টাকা হাতে পেতেই চোখের জল আর বাঁধ মানেনি তাঁর। বলছেন, “এত দিন ভিক্ষে করছি, এত টাকা এক সঙ্গে কখনও দেখিনি। চলে যাবে এতেই কয়েক মাস। আর ভিক্ষে করতে বেরোতে হবে না। যারা আমায় টাকা পাইয়ে দিলেন তাঁরা......।’’ মুখের কথা যেন মুখেই আটকে রইল। বাড়ির দাওয়ায় বসে চোখের কোণে জল এসে গিয়েছিল পিটুরিয়া কিস্কুরও। বৃহস্পতিবার ভাতা নেবেন হাতে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement