—প্রতীকী চিত্র।
ইদুজ্জোহাতে ঘরে ফেরা মানুষজনকে নিয়ে মেলা, খেলা, জলসা মুর্শিদাবাদের গ্রামাঞ্চলের বহু দিনের অভ্যাস। এই অভ্যাস বদলে নতুন বার্তা দিল সাগরদিঘি। ইদের পরে ৭দিন ধরে রক্তদান উৎসবের কর্মসূচি নিল এলাকার ১০টি গ্রামে একটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
আগামী কাল বুধবার থেকে এই উৎসবের সূচনা হবে জলবেষ্টিত উলাডাঙা গ্রাম থেকে।
সংস্থার কর্মকর্তা ইফতিকার আলম জানান, ইদের পরে সমস্ত গ্রাম থাকে উৎসবের মেজাজে। ভিন্ রাজ্য থেকে বাড়ি ফেরেন গ্রামবাসীরা।
তাই রক্তদানের এটাই উপযুক্ত সময় ভেবেই এই উৎসবের আয়োজন।
ইদুজ্জোহাকে ঘিরে রক্তদানকে উৎসবের রূপ দেওয়ার নজির মুর্শিদাবাদে বিরল। ১৯ জুন থেকে ২৫ জুন সাগরদিঘির ১০টি গ্রামে এই উতসবে ১০০০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। বহরমপুর, সাগরদিঘি ও জঙ্গিপুর হাসপাতালের সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে এই রক্ত নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কাবিলপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বলছেন, “সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই জেলায় ইদুজ্জোহা পালিত হয় উৎসবের মেজাজে। এই জেলা থেকে প্রায় ৭-৮ লক্ষ মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন বিভিন্ন রাজ্যে। ইদের সময় বাড়ি ফেরেন তাঁরা। বেশ কয়েক দিন পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে ফের তাঁরা কাজে যান অন্য রাজ্যে। ফলে ইদের সময় সমস্ত গ্রাম থাকে উৎসব মুখর। কোথাও হয় জলসা, কোথাও মেলা চলে মাস খানেক ধরে, কোথাও বা ফুটবল, ক্রিকেট।’’
তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু সাগরদিঘির কাবিলপুরে ইদের সময় রক্তদান নিয়ে সপ্তাহ ভর উৎসব চালু করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ভোট গেল, প্রচণ্ড গরম। এই সময় জেলা জুড়ে চলছে রক্তের হাহাকার। তাই জেলায় এই ধরনের উৎসব যত বেশি হয় ততই সমাজের পক্ষে ভাল।”
জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান বলছেন, “এখন রক্তদানের জন্য বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে উঠেছে জঙ্গিপুরের সর্বত্র। পিছিয়ে নেই সাগরদিঘিও। জেলা জুড়ে “রক্তদান উৎসবে”র এই বার্তাকে ছড়িয়ে দিতে পারলে জেলার অন্যত্রও এই ধরণের আয়োজন বাড়বে। যাঁরা এই উৎসব করবেন, আমি তাঁদের পাশে থেকে সব রকম ভাবে সাহায্য করব।’’
এই উৎসবের আয়োজক ইফতিকার আলম বলেন, “সাগরদিঘিতে প্রায় ২০০ গ্রাম আছে। সমস্ত গ্রামকে বছরে একবার করে হলেও রক্তদানের আওতায় আনতে চাইছি আমরা। এ বারে যে ১০টি শিবির হবে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে সেগুলি হল উলাডাঙা, চামুণ্ডা, মথুরাপুর, ইসলামপুর, দিয়ার বালাগাছি, বালাগাছি, কাবিলপুর,চর গয়েশপুর, হুকারহাট, মহম্মদপুর। এর মধ্যে তিনটি গ্রামে স্বাধীনতার পর এই প্রথম রক্তদান হচ্ছে। বহু যুবক জীবনে প্রথম বার রক্ত দেবে।”