ভাঙনে ভেঙে গিয়েছে মন।
গোটা গ্রাম জুড়ে এখন ভিটে হারানোর হাহাকার। গভীর রাতে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে ঝুপঝাপ শব্দ। নদীর বুকে একে একে ধসে পড়ছে বাড়ি। আর কয়েক দিন পরেই পুজো। অথচ ফরাক্কার হোসেনপুরের সর্বত্র এখন বিসর্জনের সুর।
অথচ কয়েক বছর আগেও এই সময়টায় পুজোর বাজনা বাজতে শুরু করে দিত হোসেনপুরে। শেষ ভাদ্রে বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে নৌকো বাইচ প্রতিযোগিতা হত। ধূমধাম করে। গ্রামে সপ্তাহভর চলত মেলা। রাত জেগে যাত্রা দেখা—আরও কত কী! এখনও অবশ্য রাত জাগছে গোটা হোসেনপুর। দুরুদুরু বুকে আশঙ্কার প্রহর গোনা, এই বুঝি ভেসে গেল সব।
গ্রামে এক সময় ঘটা করে দুর্গাপুজো হত। ভাঙনের জন্য ৩০ বছরে তিন বার বদল করতে হয়েছে পুজোর জায়গা। গ্রামের মানুষ চাঁদা দিয়ে গড়ে তুলে ছিলেন দুর্গামন্দিরের পাকা দালান। গত বছর নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে সেই মন্দির। সেই থেকে পুজো বন্ধ হোসেনপুরে। পুজো কমিটির সভাপতি হরিপদ মণ্ডলের নিজের বাড়িই বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে নদীর পাড়ে। তিনি বলছেন, “ভিটে সামলাব নাকি পুজো করব। মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছে সকলে। পুজো হবে কী করে!’’ ফরাক্কার নয়নসুখ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুলেখা মণ্ডল এই গ্রামেরই বাসিন্দা। তিনি বলছিলেন, “হোসেনপুর ও কুলিদিয়ার— দুটো গ্রামই গঙ্গার ভাঙনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। এখানে পুজোর আয়োজনের কথা কেউ ভাবছেন না এই মুহূর্তে।’’