প্রতীকী ছবি।
চলতি আইপিএল নিয়ে বাজির অন্ত নেই। সব সময় সেই বাজি যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দূর থেকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করছে, তা-ও নয়। অনেক সময়ই বাজি বসছে অন্তরঙ্গ কয়েক জনের মধ্যে। নিজেরাই স্থির করছেন বাজির দর।
সেই বাজি নানা ধরনের। যেমন চায়ের দোকানে টিভি দেখার ফাঁকে ধরা হচ্ছে বাজি। কলকাতা নাইট রাইডার্স জিতলে দোকানের সকল কে চা ও ডিম টোস্ট খাওয়াতে হবে। হারলে খাওয়াবে অন্য পক্ষ। ক্লাব ঘরে খেলা দেখতে দেখতে চলছে বাজি, দিল্লি ক্যাপিটালস হারলে দেশি মুরগির মাংস ও ভাত খাওয়াতে হবে ক্লাবের ২২ জনকে। জিতলে পর পর দু’দিন ফিস্ট। নৌকার উপর চলতে চলতে বাজি। মোবাইলে খেলা দেখতে দেখতে বাজি। রাজস্থান জিতলে সকলের ভাড়া মেটাতে হবে। বাড়ির নতুন বৌ বাজি ধরছে, গাছে পেয়ারা ধরেছে। যদি পাঞ্জাব জেতে তবে সব পেয়ারা পাশের বাড়ির বৌদির। আইপিএল নিয়ে মেতেছে তামাম জেলা। বাদ পরেনি বেলডাঙা, রেজিনগর, শক্তিপুর এলাকার মানুষ।
বেলডাঙা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি যাদব ঘোষ বলেন, “আইপিএল নিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামেও বাজি ধরা হচ্ছে। কেউ চা, মাংস, লাউ দিয়ে বাজি রাখছে, কেউ টাকার বিনিময়ও করছেন। তবে এই নিয়ে হিংসাত্মক কোনও ঘটনা যাতে না ঘটে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।”
বেলডাঙার যুবক রাঘব মণ্ডল বলেন, “করোনার জেরে সব জায়গায় যাওয়া যাচ্ছে না। বাড়িতে বসে আইপিএল দেখা যাচ্ছে। বাড়ির সামনে চায়ের দোকান সেখানে ডিম পাউরুটি, সর লাগান পাউরুটি, পেঁয়াজ কুচিয়ে লেবুর রস দেওয়া ঘুগনির বেট হচ্ছে।” শক্তিপুর এলাকার মহিলা সরলা দাস বলেন, “আমার এখানে একটা ঘটনা দেখলাম। বাড়ির মেয়েরা আমের আচার করে রেখেছে। হারলে ওই আচার খাওয়াচ্ছে।” বাড়ির পুঁই শাক, লতানে কুমড়ো, পুকুরে ধরা মাছ সবই চলছে বাজি ধরায়। গ্রামে এটা মজা কিন্তু এই আড়ালে কেউ ব্যবসাও করে নিচ্ছে। কেউ মুরগি বিক্রি করছে, কেউ চা টোস্ট, ডিমের ডেভিল। এই খেলা দেখতে গিয়ে অনেক বিবাদও মিটছে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিশ্বজিৎ ভাদুড়ি বলেন, “খেলার সঙ্গে জুয়ার আমরা বিরোধী। তবে তার রকম ফের থাকতে পারে।” জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, “সব ক্ষেত্রেই পুলিশি নজরদারি চলছে।”