মতিরুল বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
নদিয়ার তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হলেন দু’জন। শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার মুরুটিয়া থানা এলাকা থেকে কিতাব শেখ ও আসান শেখ নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। মুরুটিয়া এবং নওদা থানার পুলিশ যৌথ ভাবে ওই অভিযান চালিয়েছে। শনিবার ধৃতদের বহরমপুর জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁদের ছ’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
কয়েক দিন আগে মুর্শিদাবাদের নওদার শিবনগর এলাকায় খুন হন করিমপুর-২ ব্লকের তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মতিরুল বিশ্বাস। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন ইস্রাফিল শেখ এবং এলেম বক্স। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং ঘটনাস্থলের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে যে সব সন্দেহভাজনদের তালিকা করা হয়েছিল, তার ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কিতাব এবং আসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিতাবকে গ্রেফতার করা হয় ব্রজনারপুর এলাকায় তাঁর বাড়ি থেকে। অন্য দিকে, এলাকায় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে স্থানীয় একটি গোরস্থানে আত্মগোপন করেন আসান। তাঁর পালানোর খবর পেয়ে এলাকায় চিরুনি তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। তাতেই পুলিশের জালে ধরা দেন আসান।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, থানারপাড়া থানা এলাকার টোপলা গ্রামের বাসিন্দা আসান পেশাদার ‘সুপারি কিলার’। বাংলাদেশি সুপারি কিলারদের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের যোগাযোগ আসানের। মতিরুলকে খুন করতে পেশাদার খুনিদের একত্রিত করার কাজ আসানই করেছিলেন। খুনে জন্য ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র কিতাব সরবরাহ করেছিলেন বলে ধারণা পুলিশের। যে হেতু, দীর্ঘ দিন ধরে কিতাব এবং আসান ভিন্ রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন, তাই তাঁদের নিয়ে কারও সন্দেহ হয়নি প্রথমে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কে বা কারা সুপারি কিলারদের টাকা দিয়েছিলেন, সে ব্যাপারেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ধৃতদের। ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে একাধিক ব্যক্তির টাওয়ার লোকের সঙ্গে কল হিস্ট্রি খতিয়ে দেখে এই দুইজনকে ধরার জন্য জাল পাততে শুরু করে পুলিশ। চূড়ান্ত গোপনীয়তার সাথে মুর্শিদাবাদ পুলিশ ও কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই মতিরুল খুনে সুপারি কিলারদের সুপারকে দিয়েছিলেন কার পয়সাতে এই অপারেশন চালানো হয়, সে বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে পুলিশ মনে করছে।