প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভিন্রাজ্যে কাজে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হয় ভগবানগোলার দুই পরিযায়ী শ্রমিকের। রবিবার ভগবানগোলা থানার দুই গ্রাম গোবরা এবং মাইলবাসায় ওই শ্রমিকদের দেহ নিয়ে আসা হয়। দেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে আসে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত দুই শ্রমিকের নাম আবু তাহের শেখ (৩৮) ও আলামিন শেখ (২৭)। ভগবানগোলা থানার কুঠিরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবরা গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহের ও মাইলবাসার আলামিন দিন ১০ আগে কর্মসূত্রে ওড়িশার কটকে যান। সেখানেই নির্মাণের কাজ করতেন তাঁরা। আবু এবং আলামিন একই নির্মাণ সংস্থার অধীনে কাজ করতেন।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে আবু, আলামিন এবং নদিয়ার বাসিন্দা দীনেশ সরকার একটি সেপটিক ট্যাঙ্কে কাজ করতে নেমেছিলেন। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষণ কেটে যাওয়ার পর তাঁরা উঠে না আসায় সন্দেহ হয় সহকর্মীদের। তাঁরাই স্থানীয় দমকল বাহিনীকে খবর দেন। দমকলকর্মীরা এসে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে ওই তিন শ্রমিককে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন। তড়িঘড়ি এলাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক আবু এবং আলামিনকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান আবুর ভাই জাহাঙ্গীর। উল্লেখ্য, তিনিও কটকে অন্য এক সংস্থায় কাজ করেন। জাহাঙ্গীর ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ সঙ্গে নিয়ে রবিবার ভগবানগোলা পৌঁছন।
আবুর ভাই বলেন, ‘‘মৃত দুই শ্রমিক পরিবারের সকল সদস্যই পরিযায়ী শ্রমিক। সরকার পাশে না দাঁড়ালে আমরা অসহায়। সরকার যেন ওই ঠিকাদারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করার ব্যবস্থা করে।’’ মৃতদহ বাড়ি পৌঁছতেই মৃতদের বাড়িতে আসেন ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারগুলিকে কী ভাবে সাহায্য করা যায়, সেই বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে পরিবারগুলির জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’’
প্রসঙ্গত, মৃত আবু এবং আলামিন দু’জনেই পরিবারের বড় ছেলে। তাঁদের দু’জনেরই দু’টি করে সন্তান আছে। এ বিষয়ে বেঙ্গল লেবার ইউনিয়নের সম্পাদক দুলাল শেখ বলেন, ‘‘পরিবারগুলি যাতে সরকারের সুবিধা পান, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে।’’ মৃতের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা খরচ বহনের দাবিও সরকারের কাছে জানানো হবে বলে জানান দুলাল।