অসিত সাহার বিক্ষোভ।
দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে দলেরই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলেন কৃষ্ণনগর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অসিত সাহা।
শুক্রবার দুপুর দু’টো নাগাদ অসিত সাহার নেতৃত্বে বেশ কিছু টোটোচালক মিছিল করে হাজির হন কৃষ্ণনগর পুরসভার সামনে। পুরসভার প্রধান গেটের সামনে টোটোগুলোকে দাঁড় করিয়ে রেখে মাইক হাতে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন অসিতবাবু। সেখানেই তিনি পুরপ্রধান অসীম সাহার বিরুদ্ধে একের এক আক্রমণ হানতে থাকেন।
অসিতবাবুর অভিযোগ, “যে সব টোটোর লাইসেন্স নেই, পুরসভা সেই টোটোগুলোকে আটক করে সাতশো টাকা করে জরিমানা করছে। এটা আমানবিক। কারণ এরা একেবারেই দরিদ্র বেকার যুবক। এত টাকা ওরা কোথা থেকে দেবে।” তিনি বলেন, “তা ছাড়া পুরসভার লাইসেন্স দেওয়া ও জরিমানা করার কোনও অধিকারই নেই। কোন আইনের বলে পুরসভা এটা করছে, আমরা জানতে চাই।”
শুধু তা-ই নয়, এর প্রতিবাদ করতে দিয়ে তিনি পুরপ্রধানের কাছে রীতিমতো অপমানিত হয়েছেন বলেও এ দিন অভিযোগ করেন। অসিতবাবু বলেন, “৩০ অগস্ট বোর্ড অব কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে জরিমানা বাড়িয়ে সাতশো টাকা করা হবে। আমি প্রতিবাদ করি। কিন্তু আমার সেই প্রতিবাদ নথিভুক্ত করা হয়নি। সেই রাগ মনের মধ্যে পুষে রেখেছিলেন পুরপ্রধান। তাই ৭ সেপ্টেম্বর আমি যখন পুরপ্রধানের ঘরে গিয়ে তার কাছে আমার ওয়ার্ডের গরিব মানুষের জন্য ত্রিপল চাই, তখন তিনি আমাকে অত্যন্ত অপমানজনক কথা বলেন। এর জন্যই আজ আমি প্রতিবাদ করতে এসেছি।”
এ দিন বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন টোটোচালকেরাও। তাঁদের অভিযোগ, জরিমানার নামে পুরসভা অত্যাচার করছে। টোটোচালক বাপি সাঁতরা, আশিদুল শেখরা বলেন, “আমাদের গাড়ি সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে আটকে রেখেছে। আমরা পুরপ্রধানকে বলতে গেলে উনি আমাদের বিষ খেয়ে মরার কথা বলেন।”
যদিও এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পুরপ্রধান অসীম সাহা বলেন, “ওই কাউন্সিলরের কিছু কিছু অনৈতিক দাবি আছে। আমাদের পক্ষে সেটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। ওঁর দাবি মানা হচ্ছে না বলেই এই নাটক।”
অসীমবাবু আরও বলেন, “আমরা সাড়ে আটশো গাড়ির লাইসেন্স দিয়েছি। কিন্তু তাতে শহরে যানজট বেড়ে গিয়েছে। তাই আর নতুন করে লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে না। তা ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আমরা আর লাইসেন্স দিতে পারব না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বাইরের প্রচুর টোটো শহরে ঢুকে যানজট তৈরি করছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অনুমোদনহীন অটো দেখলে জরিমানা করা হবে।”
তবে এ ভাবে পুরসভার ভেতরের কোন্দল বাইরে বেড়িয়ে পড়ায় কার্যত বিব্রত দলের অন্য কাউন্সিলররা।