নিহত তৃণমূল নেতা মতিরুল বিশ্বাস। ফাইল চিত্র।
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের উপর আস্থা রাখলে স্বামীর ‘খুনি’রা কোনও দিন সাজা পাবেন না। কারণ, পুলিশের উপর ‘খুনি’দের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এই অভিযোগ তুলে সিআইডি তদন্তের দাবি জানালেন নদিয়ার নিহত তৃণমূল নেতা মতিরুল বিশ্বাসের (৪৫) স্ত্রী তথা নারায়ণপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিনা বিশ্বাস। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশের উপর তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তাই, তিনি চান, তাঁর স্বামীর খুনের তদন্ত সিআইডি-ই করুক।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের নওদার শিবনগর এলাকায় খুন হন নদিয়ার থানারপাড়া থানার সাদিপুরের বাসিন্দা মতিরুল। তিনি নওদার মহম্মদপুর এলাকা থেকে মোটরবাইকে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর তিনি নিজেই চালাচ্ছিলেন বাইক। পিছনের সিটে বসে ছিলেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষী। অন্য একটি মোটরবাইকে সাদিপুর এলাকার এক সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন বলে খবর। নওদার টিয়াকাটা ফেরিঘাটের আগেই শিবনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে তাঁদের দিকে বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। মোটরবাইক ফেলে শিবনগর গ্রামের দিকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন মতিরুল। কিছুটা যাওয়ার পর তাঁর দিকে একাধিক গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।
এই ঘটনার পর থেকে নওদা ও সাদিপুর দুই এলাকাই থমথমে। মৃতের আত্মীয়দের দাবি, দলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই খুন হতে হয়েছে মতিরুলকে। ইতিমধ্যেই থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সঙ্গে দেহরক্ষী থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তাঁর স্বামী খুন হলেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন রিনা। তাঁর কথায়, ‘‘দেহরক্ষী সঙ্গে থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে আমার স্বামী খুন হলেন? দেহরক্ষী কেন আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো না?’’
তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে নদিয়া জেলা পরিষদের সদস্য টিনা ভৌমিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাজকুমার কবিরাজ, পিঙ্কু মণ্ডল এবং মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খানের ভাগ্নে হাবিবের। নিহতের স্ত্রী দাবি করেন, মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের উপর হাবিবদের ‘নিয়ন্ত্রণ’ রয়েছে। তাই, স্বামী খুনে সিআইডি চাইছেন তিনি। রিনা বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের উপর হাবিবের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। সেই জন্যই আমরা সিআইডি তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে।’’প্রাথমিক ভাবে শোনা যায়, সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন মতিরুলের স্ত্রী। কিন্তু পরে মতিরুলের মাসির ছেলে ও তৃণমূল নেতা মিঠু শাহ বলেন, ‘‘স্বামীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিলেন রিনা। তাই সিআইডি বলতে গিয়ে ভুল করে সিবিআই বলে ফেলেছিলেন উনি। কিন্তু আমরা সিআইডি তদন্ত চাই। আমাদের বিশ্বাস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করবে।’’