কুয়াশা সমঝে চলার বার্তা

অনন্তবাবু বলছেন, ‘‘শীতকালে ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তার বাঁকে মরণফাঁদ থাকে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে কুয়াশা পড়লে বাস ও ফেরির নৌকা চালানোর সময় এক-দু’ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বলা হয়েছে। মালবাহী গাড়িও দেরিতে চালাতে বলা হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:২০
Share:

জানুয়ারি মানেই দগদগে দুর্ঘটনার স্মৃতি। জানুয়ারি মানে জলঙ্গির পদ্মায় বাসে উল্টে মৃত ৬৪। জানুয়ারি মানে বালিরঘাটে সেতুর রেলিং ভেঙে খালে পড়া যাত্রিবাহী বাস। আর জানুয়ারিকে ভয়ের অন্যতম কারণ কুয়াশা। জমাট সেই আস্তরণের কারণে একাধিক বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে কুয়াশার সময় চালকরা যাতে সচেতন ভাবে গাড়ি চালান সে বিষয়ে বাস, লরি মালিকদের পাশাপাশি শ্রমিক ইউনিয়নের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করলেন মুর্শিদাবাদের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক অনন্ত সরকার। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের ওই বৈঠকে কুয়াশার সময় গাড়ি চালানো নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশিকাও
তিনি দিয়েছেন।

Advertisement

অনন্তবাবু বলছেন, ‘‘শীতকালে ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তার বাঁকে মরণফাঁদ থাকে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে কুয়াশা পড়লে বাস ও ফেরির নৌকা চালানোর সময় এক-দু’ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বলা হয়েছে। মালবাহী গাড়িও দেরিতে চালাতে বলা হয়েছে।’’

জানুয়ারি শুধু পিকনিক বা উৎসবের মাস নয়। জানুয়ারি মাস উস্কে দেয় বহু দুর্ঘটনার স্মৃতি। ১৯৯৮ সালের ১৩ জানুয়ারি লালবাগ থেকে পিকনিক সেরে ফেরার পথে ঘন কুয়াশায় জলঙ্গিতে বাস নেমে গিয়েছিল পদ্মায়। ৬৪ জন ছাত্রছাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। গত বছর ২০ জানুয়ারি বেলডাঙার বেগুনবাড়িতে নয়ানজুলিতে বাস উল্টে ১০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন প্রায় ২০ জন। সে দিন ঘন কুয়াশার কারণে আমতলা থেকে হেডলাইট জ্বালিয়ে বেলডাঙার দিকে বাসটি আসছিল। ২৯ জানুয়ারি করিমপুর থেকে বহরমপুরগামী একটি সরকারি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বালিরঘাট সেতুর রেলিং ভেঙে ভাণ্ডারদহে পড়ে যায়। ৪৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন অনেকে।

Advertisement

দুর্ঘটনা কমাতে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশও উদ্যোগী হয়েছে। শীতের রাতে দুরপাল্লার পণ্যবাহী কিংবা যাত্রিবাহী গাড়ির চালকদের ঘুম আসতে পারে ভেবে নবগ্রাম ও সুতিতে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই গাড়ি চালকদের চা-জল খাওয়ানো হচ্ছে। মু্র্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার জানান, ঘন কুয়াশা হলে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গায় গাড়ি পার্কিং করে সাইড লাইট জ্বালিয়ে রাখতে হবে। কুয়াশা কম থাকলেও গাড়ির গতি কম রাখতে হবে। ফগ লাইট-সহ গাড়ির অন্য লাইট জ্বালিয়ে রাখতে হবে।

মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামল সাহা বলেন, ‘‘আমরা বাসের চালক ও হেল্পারদের এ বিষয়ে সচেতন করেছি। নিয়ম মেনে গাড়ি চালানোর কথা বলা হয়েছে। দূরপাল্লার অধিকাংশ বাসে ফগ লাইট লাগানো হয়েছে।’’ মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক জয়দেব মণ্ডল বলেন, ‘‘গতি কমিয়ে দেওয়া, দেরিতে বাস চলা নিয়ে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের যাতে হেনস্থা না করে সেটা দেখতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement