কাজ থমকে যেতেই শুরু যান চলাচল। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
তিতলি’র দাপটে রাস্তা সংস্কারের কাজ বন্ধ হল ফরাক্কা সেতুতে। লরি চলাচলেও বিধিনিষেধ না থাকায়, বৃহস্পতিবার সেতুর উপর দিয়ে অবাধে তাই চলল ভারি যানও। হাঁফ ছাড়লেন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে আটকে পড়া কয়েক হাজার লরি চালক। এ দিনের মত স্বস্তিতে রইল পুলিশও। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে আগামী দু’দিন সেতু সংস্কারের কাজ করা যাবে কিনা তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর ফলে ফরাক্কা ব্যরাজ কর্তৃপক্ষের কপালে বাঁজ পড়লেও লরি চালকদের স্বস্তি মিলেছে।
৫ অক্টোবর শুরু হয়েছিল ফরাক্কার সেতু সংস্কারের কাজ। ২২৪৫ মিটার দীর্ঘ দুই লেনের সেতুর ১১২ টি লক গেটের মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ১১টি লকগেটের এক লেনের রাস্তার বিটুমিন ও ঢালাইয়ের কংক্রিট ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়েছে। ৬টি ড্রিল মেসিন ও গোটা চারেক শাবল দিয়ে জনা কুড়ি শ্রমিক কাজ করায় সেভাবে গতি নেই কাজে । সংস্কারের জন্য দিনভর বন্ধ থাকছে পণ্যবাহী লরি চলাচল। এ ভাবে ঢিমেতালে কাজ চলায় যানজট সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ জেলার পুলিশ কর্তারা।
তিতলির বৃষ্টি যে তাদের কাছে শাপে বর হয়েছে তা মানছেন লরি চালক ও পুলিশ উভয়েই। ফরাক্কার দুর্ভোগের শিকার লরি চালক মেমারি’র সইফুদ্দিন শেখ। বুধবার সকালেই লরি নিয়ে আটকে পড়েন তিনি আহিরণের কাছে। রাতভর লরি চালিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে এসে পৌঁছান ফরাক্কার বল্লালপুরে । পুলিশ বৃষ্টির মধ্যে সকালে গাড়িও আটকে দেয় তার। পরে কাজ বন্ধ আছে জেনে লরি ছাড়তে শুরু করে। দুর্ভোগ থেকে একদিন আগেই ছাড় পাওয়াই খুশি সইফুদ্দিন এদিন দুপুরের মধ্যেই পার হয়ে যান ফরাক্কা সেতু। জামসেদপুরের বিলাস শর্মাকেও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে তিতলি।
ফরাক্কার আইসি উদয় শঙ্কর ঘোষের গলাতেও কিছটা স্বস্তির সুর। বলছেন, “দুর্যোগ আগে কাটুক। শুক্রবার বিকেলে বৈঠক
ডাকা হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআই জি বাস্তব বৈদ্য, জেলা পুলিশ সুপার মুকেশকে সঙ্গে নিয়ে ফরাক্কা সেতুর কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে আসেন। শুক্রবার সেতু সংস্কার নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে ফরাক্কার গঙ্গাভবনে। তবে ফরাক্কার জেনারেল ম্যানেজার শৈবাল ঘোষ বলেন, “এই মিটিংয়ের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।” তবে, ব্যারাজের সার্কেল ১ শাখার সুপারেনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ কুমার সিংহ বলেন, “সেতু সংস্কারের কাজে গতি আনতে ঠিকাদারকে ডেকে পাঠিয়ে বুধবারই সেখানে আরও বেশি শ্রমিক নিয়োগ করতে বলা হয়েছে।”