গত জুলাই মাসের প্রথম দিকে খোলে হাজারদুয়ারি-সহ ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অধীনে থাকা সমস্ত পর্যটনকেন্দ্রই। ছবি: সংগৃহীত।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে মুখে হাসি ফুটছে লালবাগ শহরের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকলের মুখেই। পুজো শুরু হতেই পর্যটকের আনাগোনা শুরু হয়েছে জেলার পর্যটন শহর বলে পরিচিত লালবাগে। তাতে আশার আলো দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতি বছর পুজোর সময় থেকেই লালবাগ শহরে পর্যটকের মরসুম শুরু হয়ে যায়। মরসুম চলে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। তবে, লালবাগে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসে ডিসেম্বরের প্রথম থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। এ ছাড়া, অন্য উৎসব, ২৬ জানুয়ারি, ১৫ অগস্ট এবং সরকারি ছুটির দিনগুলিতেও পর্যটকদের বাঁধ ভাঙে লালবাগে। কিন্তু গত বছর পর্যটনের মরসুম শুরু হওয়ার সময়েই এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভে পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল লালবাগে। তারপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল। কিন্তু তার মধ্যেই করোনার সংক্রমণ এবং লকডাউন ঘোষিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় হাজারদুয়ারি-সহ ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অধীনে থাকা লালবাগের সমস্ত পর্যটনকেন্দ্র। বিপাকে পড়তে হয় শহরের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকলকেই।
অনেকে রোজগারহীন হয়ে পড়ায় ইতিমধ্যে পেশাও বদলে ফেলেছিলেন। গত জুলাই মাসের প্রথম দিকে খোলে হাজারদুয়ারি সহ ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অধীনে থাকা সমস্ত পর্যটনকেন্দ্রই। কিন্তু পর্যটনকেন্দ্র খুললেও পর্যটকের দেখা মেলেনি। কিন্তু পুজো পড়তেই বদল হয়েছে সেই চিত্রের। ষষ্ঠীর দিন থেকেই ছোট গাড়ি, বাস পর্যটক নিয়ে ঢুকতে শুরু করেছে শহরে। পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত প্রায় সকলেই জানাচ্ছেন, ষষ্ঠী থেকে প্রতিদিন একটি, দু’টি করে পর্যটক-ভর্তি বড় বাস আসছে লালবাগে। ছোট গাড়ি করেও পর্যটকরা আসছেন। পর্যটক ধরতে হোটেলের প্যাকেজ কমাচ্ছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।
হাজারদুয়ারি লাগোয়া একটি হোটেলের মালিক পরিতোষ দাস বলছেন, ‘‘একেবারেই পর্যটক আসছিল না। এখন পর্যটকরা আসতে সবে শুরু করেছে। অনেক পর্যটক হোটেল বুকিংয়ের জন্য ফোন করছেন। কিন্তু ট্রেন না চলায় তাঁরা আসতে পারছেন না। হোটেলের ভাড়া কমিয়ে দিয়েছি। ছাড় না দিলে পরিস্থিতি বদলানো কঠিন। আগামী কয়েক মাস পরিস্থিতি না বদলালে আমাদের সঙ্কট।’’ মুর্শিদাবাদ টাঙ্গা ইউনিয়নের সম্পাদক মনু শেখ বলেন, ‘‘শহরে পর্যটক সবে আসতে শুরু করেছে। তবে ট্রেন চালু হলে আরও পর্যটক আসবে। আশা করছি, দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’’ মুর্শিদাবাদ পুরসভার প্রশাসক বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পর্যটক সংখ্যায় কম হলেও আসতে শুরু করেছে। পর্যটকদের থাকার জন্য পুরসভার যে আবাস রয়েছে সেখানেও নভেম্বর মাসের জন্য বেশ কিছু বুকিং হয়েছে। করোনা সংক্রমণের সময় সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সেখানে সব বন্দোবস্ত করা হয়েছে।’’